ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নওগাঁয় হিজাব বিতর্কের গুজব মামলয় গ্রেপ্তার ২

প্রকাশনার সময়: ১৫ এপ্রিল ২০২২, ১৭:০১

নওগাঁর মহাদেবপুরে সনাতন ধর্মালম্বী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হিজাব নিয়ে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগে গুজবচক্রের মূলহোতাসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর আগে রাত সাড়ে ৩টার দিকে নওগাঁ শহরের বইপট্টি ও কুশারসেন্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে শনিবার ৯ এপ্রিল থানায় মামলা করলে উপজেলা সদরের বাসিন্দা মৃত কাজী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কিউএম সাঈদ টিটো (৫৫) ও কুশারসেন্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা কাজী ময়েন উদ্দিনের ছেলে কাজী সামছুজ্জোহা মিলনকে (৪৫) আটক করে থানা পুলিশ।

মামলার অন্য আসামিদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমোদিনী পালের করা মামলায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদসহ অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আমোদিনী পালের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই মো. শামিনুল ইসলাম জানান, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পলাতক থাকায় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার কারা সম্ভব হয়নি। আসামিদের আটক করতে আমাদের চেষ্টা অব্যহত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, নির্ধারিত পোশাক (স্কুল ড্রেস) পরে না আসার কারণে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে শাসন করার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করা হয় হিজাব পরার শাস্তি হিসেবে। কথিত হিজাব বিতর্কের অন্তরালে রয়েছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি দ্বন্দ্ব ও অনিয়ম-দুর্নীতি। এদিকে ধর্মীয় ইস্যুতে গুজব ছড়ানো হয়। যা ছিল অপ্রত্যাশিত। সকলের উচিত কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে আরো সচেতন হওয়া।

উল্লেখ্য, উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী ফেসবুকে ‘হিজাব পরায়’ পিটুনির অভিযোগ এনে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করে। এরপর আরো কিছু ভিডিও আসে। পাশাপাশি বেশ কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

মেয়েদের অভিযোগের পর তোলপাড়ের মধ্যেই ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্কুলটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আসলে কী ঘটেছিল, তা বের করতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

দায়িত্ব দেয়া হয়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আরিফ প্রামাণিক এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে। সোমবার রাত ৮টার দিকে তদন্ত কমিটি মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমানের কাছে সেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্কুল ড্রেস না পড়ার কারণে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষক বেত্রাঘাত করেন। তাদের মধ্যে হিন্দু ছাত্রী ও ছেলে শিক্ষার্থীও ছিল। হিজাব পরার কারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে, এমন তথ্য তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি।

নয়া শতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ