ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চিকিৎসার কথা বলে ভারতে নিয়ে কিডনি বিক্রি!

প্রকাশনার সময়: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০৬:১৭

উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে অসহায় এক শ্রমিকের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে একটি অসাধু চক্র। দেশে ফিরে সেই ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নিলে গ্রেফতার হয় ওই চক্রের সাথে জড়িত এক নারী। কিডনি হারিয়ে চিকিৎসার অভাবে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শ্রমিক আব্দুল কাশেম।

এর আগে রোববার (৩ এপ্রিল) বিকেলে মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পাচারকারী চক্রের সদস্য বিউটি আক্তার নামের এক নরীকে আশুলিয়ার দূর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩। পরে তাকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃত বিউটি বেগম নাটোর জেলা সদরের কালীবাড়ি এলাকার মৃত বিনসের আলীর মেয়ে। বিউটির অপর দুই সহযোগী এখনো পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন, বিউটি আক্তারের স্বামী মোঃ শহিদ (৪৫)। সে নাটোর সদর থানার কালীবাড়ি এলাকার ইসলাম ব্যাপারীর ছেলে ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে শেখ ফরিদ (৪২)।

এজাহার থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী আব্দুল কাশেম আলী (৩৮) গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহাট গ্রামের মোঃ হাফিজার রহমানের ছেলে। সে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সেবা শুশ্রূষার জন্য আশুলিয়ায় স্ত্রী ববিতা বেগমের কাছে আসেন। পরে তাদের পূর্ব পরিচিত বিউটি বেগম তার অসুস্থতার কথা জানতে পেরে চিকিৎসা করানোর জন্য সহায়তা করার প্রলোভন দেখায়। বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বিউটি বেগম নিজের পাসপোর্ট বের করে দেখায়। বিউটি বেগমের কথা বিশ্বাস করে উন্নত চিকিৎসার লোভে নিজেরাও পাসপোর্ট ও ভিসা করেন আবুল কাশেম দম্পতি। পরে বিউটি বেগম যশোর বর্ডার দিয়ে তাদের ভারতে নিয়ে যায়। পরে ভারতের অজ্ঞাত স্থানে রেখে বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের ডাক্তার দেখানোর জন্য ঘুরায়। পরে জানায় যে তার অপারেশন করতে হবে। চিকিৎসার কথা বলে তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে নেয় আসামিরা। একদিন ভারতের কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতালে অপারেশনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অজ্ঞান করা হয় কাশেমকে। জ্ঞান ফিরে সে দেখতে পায় তার পেটের বাম পাশের অংশ কাটা।

ভুক্তভোগী আব্দুল কাশেম বলেন, ডাক্তারদের জিজ্ঞেস করলে ডাক্তার জানায় আমি নাকি স্বেচ্ছায় কিডনি দান করেছি। আমি আসামিদের কাছে আমার কিডনির কথা জানতে চাইলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দেশে পাঠিয়ে দেয়। পরে নিরুপায় হয়ে আমি র‍্যাব-৩ এর কাছে আইনি সহায়তা চাই গত ২ এপ্রিল। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আশুলিয়ায় অভিযান চালায় র‍্যাব। আমার কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে তারা। আমি তাদের বিচার চাই।

আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-৩। মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন অনুযায়ী ও প্রতারণার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আশুলিয়া থানায় মামলা নং ৭। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়া শতাব্দী/এমআরএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ