গত ২১ মার্চ ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ হাজার ২৮৪ কেটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠে কয়লা ভিত্তিক অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। ২০১৬ সালে এ প্রকল্পটি নির্মাণ করতে জমি অধিগ্রহণ করা শুরু হয়।
প্রকল্পটি নির্মাণ করতে জমি দাতাদের প্রদান নগদ টাকা ও তাদের পুনর্বাসনের জন্য স্বপ্নের ঠিকানা নামের একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত আবাসন নির্মাণ করা হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশেই ১হাজার ২০০বর্গ ফুট জমির উপর। এ আবাসনে নির্মাণ করা হয় ১৩০টি ঘর, স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, দুইটি পুকুর ও প্রতি ৪ পরিবারের জন্য একটি করে ডিপ টিউবওয়েল। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর স্বপ্নের ঠিকানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিজেদের সম্বলের জমি হারানোর পরে আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়ে খুশি ক্ষতিগ্রস্থরা। তবে তাদের দাবি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় তাদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও সেই চাকরি করছে এখন বাহিরের এলাকার মানুষেরা। স্বপ্নের ঠিকানার বাসিন্দা নাঈম হোসেন জানান, ঘর পেয়ে আমরা খুশি কিন্তু কাজ না থাকলে খাবো কী? আগে মাঝে মধ্যে আমরা প্লান্টে কাজ করতাম এখন সেটাও বন্ধ। প্রধান গেট বন্ধ থাকে আর ওই জায়গায় অন্য এলাকার লোকেরা এসে কাজ করে কিন্তু আমরা চাকরি পাই না। আমাদের স্বপ্ন অর্ধেক অবস্থায় রয়ে গেলো। স্বপ্ন আর পূর্ণ হলো না।
আরএক বাসিন্দা রানী বেগম আক্ষেপ করে জানান, আমাদের জমি নেয়ার সময় পরিবারের লোকজনদের চাকরি দেয়ার কথা ছিলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে কিন্তু সেখানে আমাদের পরিবারের কেউ চাকরি পায়নি। তাছাড়া জমির দাম তিনগুন দেয়ার কথা থাকলেও আমাদের সেরকম টাকা দেয়া হয়নি। ঘরের পুরুষরা কাজ পাইতেছে না।
এসকল বিষয় অস্বিকার করে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের জমির মূল্যের অধিক টাকা প্রদান করা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কথা কেউ বলে থাকে তবে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু সরকার বিরোধী লোকেরা এগুলো ছড়াচ্ছে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্বাহি প্রকৌশলী রেদওয়ান ইকবাল জানান, আমারা এখানকার লোকদের চাকরি দেয়ার কথা বলেছি কিন্তু নুন্যতম যোগ্যতা কারো না থাকলে সে কীভাবে চাকরি করবে? স্বপ্নের ঠিকানার মধ্যে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কাজ চলছে। এখান থেকে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে তারা অবশ্যই চাকরি করতে পারবে। তাছাড়া কারিগরি শিক্ষা নিয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে প্রয়োজনে বিদেশে গিয়ে চাকরি করতে পারবে অনেকেই।
এ বিষয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলা জানান, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শিক্ষা শেষ হলেই চাকরি করতে পারবে এখানকার মানুষেরা। কিছু লোক আমাদের এখানে চাকরি পেয়েছে। বাকিরা কারিগরি প্রশিক্ষণ শেষে পর্যাক্রমে চাকরি পাবে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ