‘কুলফি নিবেন কুলফি, মজাদার কুলফি’ এমন করেই ডাকতে ডাকতে ক্রেতার কাছে ছুটে যায় মুমিন। আইসক্রিম বিক্রি করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ইট বিছানো রাস্তা আর মেঠো পথে একটি ভ্যানগাড়ীতে বাক্স ভর্তি কুলফি আইসক্রিম নিয়ে ঘুরে বেড়ান মুমিন (৩৫)।
মুমিন পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার খামার কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়েই মুমিনের সংসার। কর্ম জীবনের শুরুতে মুমিন কৃষি কাজ করলেও গত কয়েক বছর ধরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কুলফি আইসক্রিম বিক্রি করছেন তিনি। সামান্য আয়ে চালাতে হচ্ছে পরিবারের খরচসহ সন্তানের লেখাপড়া।
শনিবার সকালে বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের দুধকুড়ি গ্রামের ফেরি করে আইসক্রিম বিক্রি কালে কথা হয় মুমিন এর সাথে, বর্তমান বাজারে চাল, ডাল, তেল ও সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের যে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে তাতে মুমিনের চোখে মুখে ক্লান্তি আর হতাশার ছায়া।
কুলফি আইসক্রিম বিক্রেতা মুমিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমি ফেরি করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কুলফি বিক্রি করি। এই কুলফি আমি খুব সকালে আইসক্রিম ফ্যাক্টরি থেকে নিয়ে ফেরি করে গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন যায়গায় বিক্রি করি। প্রতিদিন ১শ’ দেড়'শ কুলফি বিক্রি হয়। প্রতিটি কুলফি আকার ভেদে ৫ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতিদিন ৫শ‘ টাকার মতো আয় হয়। ভোর ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিকেল সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যবসা করি। কুলফি তৈরির কাচামাল এর দাম বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে চড়াও দামে কিনতে হয় আইসক্রিম। সব মিলিয়ে লাভের পরিমাণ খুব কম। পরিবারে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে আমার অভাবের সংসার। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে কোনোমতে চলে আমার সংসার। সব মিলিয়ে আমি আর পারছি না। বাজারে চাল, ডাল, তেল, আটা ও শাক সবজির যে দাম বেড়েছে তাতে আমার সংসারে নুন আন্তে পান্তা ফুরায়, গরীব মানুষ খাবো কি। আমার মতো অনেক মানুষ গরীব অসহায় রয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন করি নিত্যপণ্যের দাম কমানোর। অসহায় গরীব দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষগুলো এই সামান্য মজুরিতে কীভাবে সংসার চালাবো। নুন আন্তে পান্তা ফুরানোর এই অভাবের সংসারে আমার মত নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষেরা সংসার চালাতে গিয়ে বড্ড হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ