রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে বন্দরে আটকা পড়া বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে রকেট হামলায় এক নাবিক নিহত হয়েছেন। জীবিত ২৮ জনকে আজ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে ইউক্রেনের একটি ব্যাঙ্কারে। তবে আতঙ্ক কমেনি স্বজনদের।
বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি’র ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খানের বড় ছেলে ফারহান বলেন, জাহাজে ২৯ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। আব্বু বেঁচে আছেন। সেখানে খাবারের কষ্ট হচ্ছে, অল্প খাচ্ছেন। জাহাজে পানি ঢুকে গেছে। বাড়ির সবার মন খারাপ। আব্বুকে ফিরিয়ে আনুন আপনারা।
ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান সাতক্ষীরার নারকেলতলা এলাকার অবসরপ্রাপ্ত বিআরডিসি কর্মকর্তা সেলিম খানের ছেলে। মনসুরুল আলম খান এলাকায় গিনি নামেই পরিচিত তিনি। ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খানের বাবা জানান, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বাড়িতে কথা বলেছেন গিনি। জানিয়েছেন, ভালো আছেন। সন্ধ্যার দিকে ইউক্রেনের ওয়ালভিয়া বন্দরে তাদের নামানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন।
সেলিম খান জানান, ছেলের জন্য বাড়ির সবাই খুব চিন্তিত। ওর মা, স্ত্রী সারাদিন কান্নাকাটি করছে। তিন ছেলের জনক ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান। ফাহিমি ও ফারহান (১০) যমজ, তারা ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর ছোট ছেলে ফারদিনের বয়স তিন বছর।
সেলিম খান বলেন, ২০০৬ সালে জাহাজের ক্যাপ্টেন পদে চাকরি জীবন শুরু করে গিনি। সবশেষ তিন মাস আগে বাড়িতে এসেছিল। ৬-৭ মাস পর পর বাড়িতে আসে। ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আটকা পড়বে, এটি কেউ ধারণা করেনি। জাহাজে রকেট হামলার পর আজ প্রথম কথা হয়েছে। সেখানে খাবারের সমস্যা হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার খাচ্ছে জাহাজে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা। নেটওয়ার্ক ও ফোনে চার্জ না থাকায় খুব বেশি যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিপিং অফিস থেকে যোগাযোগ করে বলেছে, আমরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছি, আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউক্রেনিরা মাইন বসিয়ে রাখায় জাহাজটি বের হতে পারেনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি শুনেছি জাহাজের ক্যাপ্টেন একজনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন কোনো ম্যাসেজ এখনও আমরা পাইনি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ