চুয়াডাঙ্গায় স্মরণকালের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ১০মিনিটে শুরু হয় এ শিলাবৃষ্টি।
জানা গেছে, রোববার বিকেলে ঝড়ের সাথে একটানা ১০মিনিট শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিলো। এরপর ৪টা পর্যন্ত ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হতে থাকে। ঝড়ো-বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে টিনের ঘরবাড়িসহ কাঁচা ও আধাপাকা স্থাপনা। এ সময় বড় বড় শিলায় ঢেকে গেছে মাটি। দমকা হাওয়ায় সড়কের ওপর ভেঙে পড়েছে গাছের ডালপালা। তবে এখনও থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে এ জেলায়।
চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া ও কৃষি অধিদপ্তর বলছে, চুয়াডাঙ্গাবাসি পূর্বে এমন শিলাবৃষ্টি দেখেনি। কৃষকদের ফসলের এমন ক্ষয়ক্ষতি আগে কখনো হয়নি।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শিলাবৃষ্টির কারণে ভূট্টা ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও কুল, তরমুজ, আম মুকুল, পান, তরমুজ, তামাক, টমেটোসহ সব ধরনের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ধানের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। শিলাবৃষ্টিতে ভুট্টার সব গাছ ভেঙে এখন চাষিদের মাথায় হাত ওঠার উপক্রম হয়েছে।
ভুট্টার গাছ ভেঙে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এখন এই ভুট্টার ক্ষেত থেকে জ্বালানি ছাড়া আর কিছু পাওয়ার আশা নেই। এছাড়াও, যাদের টিনের চাল তাদের টিন ফুটোও হয়ে গেছে এই শিলাবৃষ্টিতে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষকরা সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা কামনা করছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানায়, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সব ভুট্টা গাছ ভেঙ্গে শেষ হয়ে গেছে। তরমুজ ফুটো হয়ে গেছে। আমরা এখন কি খাবো। পরিবারকে নিয়ে পথে নামতে হবে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ঋণ নিয়ে বিঘা বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে ক্ষেতের সব ভুট্টা গাছ ভেঙে গেছে। জমিতে ভুট্টা চাষের আর কোন সুযোগ নেই। এখন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবো কিভাবে?
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার তালহা জুবায়ের বলেন, শিলা বৃষ্টির পর আমি ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেছি। সদর উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব থেকে ভুট্টা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও তরমুজ, কুল, আম মুকুল ক্ষতি হয়েছে। তবে ধানের কম ক্ষতি হয়েছে। এমন ক্ষয়ক্ষতি আগে কখনো দেখেনি আমরা। অনান্য উপজেলার চেয়ে সদরে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের৷ তবে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে একটু সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, এমন শিলাবৃষ্টি চুয়াডাঙ্গাবাসি আগে কখনো দেখেছে কিনা জানিনা। দুপুর ৩টা ১০থেকে ৪টা পর্যন্ত ১৮মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এক ইঞ্চি পরিমাণ শিলাসহ ওই সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।
নয়া শতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ