উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে বাংলায় সাইনবোর্ড লিখা বাধ্যতামূলক। আট বছর আগে এমন নির্দেশনা থাকার পরও ঠাকুরগাঁও শহরের কম বেশি অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনও শোভা পাচ্ছে ইংরেজিতে লিখা সাইনবোর্ড। কালো কালিতে ইংরেজি সাইনবোর্ড মুছে দেয়ার মতো আন্দোলন হলেও বাংলায় সাইনবোর্ড লিখা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি এখনো। এভাবে প্রচারণায় বাংলা ভাষার ব্যবহার বর্তমানে বিলীন হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।
শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে ইংরেজি প্রীতি রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ইংরেজির পাশাপাশি ছোট অক্ষরে বাংলা ভাষার ব্যবহার করছে। তবে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সাইনবোর্ডে বাংলার ব্যবহার উপেক্ষিত। বিভিন্ন দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বড় করে ইংরেজিতে লিখা হচ্ছে। এমনকি বড় করে বাংলায় লিখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেটা মানছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। এভাবে একদিকে যেমনিভাবে নিজের ভাষার প্রতি অবমাননা, অপরদিকে আইন অবমাননা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বর প্লেট, সব দফতরের নামফলক এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’ একই বছরের ২৯ এপ্রিল হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।
শহরের সুশীল সমাজের ব্যক্তি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শুধু ভাষার মাসে এবং ডিসেম্বরে সাইনবোর্ড এ বাংলা লেখার জোর দাবি ওঠে। বছরের বিভিন্ন সময় এমন কোন কার্যক্রম থাকে না, থাকলে সবাই সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে নিত। ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার সময় সাইনবোর্ড বাংলায় লেখার শর্তজুড়ে দেয়া দরকার।
সাংবাদিক আবু তোরাব মানিক বলেন, মাতৃভাষার প্রতি অবশ্যই আমাদের সম্মান জানানো উচিত। মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে সকলকে সচেতন হতে হবে। আর প্রশাসনের উচিৎ জরুরী ভিত্তিতে ইংরেজি লেখা সাইনবোর্ড এর উপর একটি অভিযান পরিচালনা করা।
সাংবাদিক মজিবর রহমান খাঁন বলেন, বাংলা ভাষাকে শুধু অন্তরে লালন করলেই হবে না, বাস্তবেও তার প্রতিফলন দেখাতে হবে। হাই কোর্টের আদেশ থাকার পরেও ইংরেজিতে সাইনবোর্ড লেখা রয়েছে এর প্রধান কারণ প্রশাসনের পক্ষ হতে কোন তদারকি নেই সেজন্য।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, সাইনবোর্ড তৈরিতে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা আছে। সেটি যারা মেনে চলেননি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ