ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সুন্দরবনে পনেরো লাখ টাকার নিষিদ্ধ কাঁকড়া আটক

প্রকাশনার সময়: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:৫৬

সাতক্ষীরা সুন্দরবন থেকে শিকার নিষিদ্ধ দুই হাজার কেজিরও বেশী কাঁকড়া আটক করেছে কোষ্টগার্ড সদস্যরা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় পনেরো লাখ টাকা। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালের দিকে কৈখালী কোম্পানী কমান্ডারের নেতৃত্ব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন বাজারের মোড়ল এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ওই কাঁকড়া আটক করা হয়।

প্রজনন মৌসুম হওয়ার কারণে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি দুই মাস সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালীরা চোরা শিকারী দিয়ে গোপনে সুন্দরবন থেকে ডিমওয়ালা এসব কাঁকড়া শিকার করে আসছিল। তবে অভিযানের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি। সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারীদের মাধ্যমে সংগৃহীত শিকার নিষিদ্ধ কাঁকড়ার বিশাল এ চালান ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে তা আটক করা হয়।

কোষ্টগার্ড কৈখালী কোম্পানী কমান্ডার লেঃ জহিরুল ইসলাম জানান, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও জেলে ঠিকই সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া শিকার করে। বিশাল একটি চালান ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে কোষ্টগার্ড সদস্যরা তা আটক করতে সমর্থ হয়েছে। আটককৃত কাঁকড়া বনবিভাগের উপস্থিতিতে সুন্দরবন সংলগ্ন মাদার নদীতে অবমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। কাঁকড়া আটক করা গেলেও কাঁকড়ার মালিকসহ জেলেরা পালিয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় অনুসন্ধান শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বনবিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হবে।

এদিকে বনবিভাগের কৈখালী ষ্টেশন অফিসার হারুন-অর রশিদ জানান, কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ বলে এখন সাদা মাছের পাশ দেয়া হয়। তবে কিছু জেলে বনে প্রবেশের পর কাঁকড়ার শিকারের মত অপরাধ করছে।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, গত সাত/আট দিন পূর্বে বনবিভাগের নিকট থেকে সাদা মাছের পাশ নিয়ে অর্ধ্বশত নৌকা নিয়ে প্রায় শতাধিক জেলেরা সুন্দরবনে যায়। এসময় বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় অবস্থান করে তারা কাঁকড়া শিকার অব্যাহত রাখে। বিষয়টি বনবিভাগের পদস্থ কর্মকর্তাদের স্থানীয় কয়েকটি সূত্র অবহিত করে।

এরপর প্রায় দুই দিন অভিযান চালিয়ে বুড়িগোয়ালীনি ষ্টেশন অফিসারের নেতৃত্বে বনকর্মীরা একটি নৌকাসহ মাত্র ১০ কেজি কাঁকড়া জব্দ করে লোকালয়ে ফিরে আসে।

আকতার আলী, রাকিব হোসেনসহ স্থানীয়রা বলেন, বনবিভাগের অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যরা নদী থেকে উঠে আসার পর সোমবার রাতে চোরা শিকারীরা ভিন্ন পথে এসব কাঁকড়া নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসে। পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী যাবতীয় কাঁকড়া একই রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন সুন্দরবন বাজারের মোড়ল এন্টারপ্রাইজে হস্তান্তরের পর মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে কোষ্টগার্ড সদস্যরা তা আটক করে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক রাসেল মাহমুদ মোড়ল জানান, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন নার্সিং পয়েন্টের কাঁকড়া ছিল এসব। জব্বদকৃত কাঁকড়ার আনুমানিক মুল্য প্রায় পনের লাখ টাকা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ