টাঙ্গাইলে সর্বত্র বোরোর আবাদ করা হচ্ছে। বোরো মৌসুমের শুরুতেই টাঙ্গাইলে বিভিন্ন সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চাষিরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চাইতে কোন কোন সারের দাম দ্বিগুন নিচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। এমনিতেই ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষ বাবদ অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে তাদের। তার ওপর বাড়তি দামে সার কিনতে হওয়ায় ধানের উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন জেলার কৃষকেরা। জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ জানায়, দাম বেশি নেয়ার সুযোগ নেই। তার পরও যদি কেউ বেশি দামে বিক্রি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ জমিতে বোরো লাগানো শেষ হয়েছে। জেলায় আনুমানিক ৪ লাখ ৫০ হাজার বোরো কৃষক রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সরকার নির্ধারিত দাম টিএসপি সার ২২ টাকা, ডিএপি সার ১৬ টাকা, ইউরিয়া প্রতি কেজি ১৬ টাকা এবং পটাশ সার ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কৃষকদের কিনতে হচ্ছে এর চাইতে অনেক বেশি দামে। আবার স্থানভেদে সারের মূল্যের তারতম্যও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
ডিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে করেন ইউরিয়া ১৮ টাকা, বিএডিসির ডিএপি ২০ টাকা, পটাশ ২২ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি করছে। এছাড়াও বাংলা ডিএপি সার ১৬ টাকার পরিবর্তে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় প্রতি কেজি সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।
কৃষকরা বলেন, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় যন্ত্র চালিত মেশিন দিয়ে চাষ করায় এমনিতেই ডিসিমল প্রতি ১৫ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। তার ওপর বাড়তি দামে সার কিনতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চাষ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনবাড়ী এলাকার কৃষক হাবিব মিয়া বলেন, আমি প্রতি কেজি ইউরিয়া ১৮ টাকা কিনেছি। কিন্তু মূল্য তালিকায় ১৬ টাকা নির্ধারণ ছিলো। বিক্রেতা বলছেন তারাই বেশি দামে সার কিনেছে। দাইন্যা ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের নবাব আলী বলেন, সারের দাম এবার অনেক বেশি। প্রতি কেজি বাংলা ডিএপি ৩৬ টাকায় কিনতে হয়েছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে আমরা সার কিনতে পারছি না। এক পর্যায়ে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাসার বলেন, গ্রাম অঞ্চলের কিছু খুচরা ব্যবসায়ীরা পটাশ সারের দাম কিছুটা বৃদ্ধি করেছিল। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সরকার ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করার সুযোগ নেই।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জেলার প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ