ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাসপাতালের শয্যায় সংবর্ধিত হলেন ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন

প্রকাশনার সময়: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:২৩

ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন সরকার গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। অনুষ্ঠানে যেতে না পারায় হাসপাতালে গিয়েই তাকে সংবর্ধনা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামানসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন সরকারের খোঁজ নিতে এবং তাকে সংবর্ধনা জানাতে ফুল, সম্মাননা স্মারক ও আর্থিক সহায়তার নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে হাসপাতালের চারতলায় সরকারি কর্মচারী কেবিনে হাজির হন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান। এ সময় তার সাথে ছিলেন পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা ও অধ্যাপক কবি তারিকুল ফেরদৌস।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে কাছে পেয়ে ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন সরকার আবেগ আপ্লুত হয়ে বিছানায় শুয়েই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার আবেদন জানান। এ সময় জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান ভাষা সৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকারকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে তার হাতে সম্মাননা স্মারক ও আর্থিক সহায়তার নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জামালপুরের গর্ব ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন সরকারকে জেলা প্রশাসন সব সময় সহযোগিতা করে আসছে। তার কাছ থেকে জামালপুরের ভাষা আন্দোলনের অনেক অভিজ্ঞতার কথা শুনতে পেরে ভালো লাগলো। তার চিকিৎসার সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। আশা করি উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

ভাষা সৈনিক কয়েছ উদ্দিন সরকারের বয়স প্রায় ৯৫ বছর। জামালপুর জেলা শহরের বেলটিয়া গ্রামে ১৯২৭ সালের ২১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা মৃত ছইম উদ্দিন সরকার ও মাতা মৃত কুলছুম বেগমের অষ্টম সন্তান তিনি। তিনি চিরকুমার। তিনি শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ একজন বামপন্থী কর্মী। কয়েস উদ্দিন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে সকল জাতীয় সঙ্কটময় মুহূর্তে তার তৈরি ও মুখে মুখে গাওয়া গণসঙ্গীত মেহনতি মানুষের কণ্ঠকে ধারণ করেছে। ভাসানী ন্যাপের রাজনীতির সাথে যুক্ত এই ভাষা সৈনিক ভাষা আন্দোলন, আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণআন্দোলনে রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে জনতাকে অনুপ্রাণিত করতেন। এসব করতে গিয়ে তাকে শাসক শ্রেণির কবলে নির্যাতনও ভোগ করতে হয়েছিল। স্মরণশক্তি প্রখর ও কথা বলতে পারলেও বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই প্রবীণ ভাষাসৈনিক বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভোগছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ১৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে তিনি জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ