প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের যশোর ব্যুরো প্রধান মিজানুর রহমান তোতা (৬৫) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার সকাল ৭টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন। তাছাড়া তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়েছিল। গতকাল বাদ জোহর যশোর শহরের নূতন খয়েরতলা জামে মসজিদে তার নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল জানান, গেল মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। করোনার উপসর্গ থাকায় তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু ফলাফল নেগেটিভ আসে।
এর কয়েকদিনের মাথায় দ্বিতীয় বারের মতো তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। সেই দিন তাকে বেসরকারি কুইন্স হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার ডাক্তাররা তাকে কোভিড-১৯ রোগী বলে শনাক্ত করেন।
পরীক্ষায় দেখা যায় তার ফুসফুসের প্রায় ৬৫ শতাংশ আক্রান্ত। সাথে সাথেই তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা রেড জোনে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হয়। শেষ দিকে তার করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। একপর্যায়ে ঘণ্টায় দুই-তিন লিটার অক্সিজেন চলছিল তার শরীরে। কিন্তু করোনা রেড জোন থেকে বের করে স্ট্রোকের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি।মিজানুর রহমান তোতার মৃত্যুতে প্রেসক্লাব ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে শোকবই। তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রেসক্লাব যশোর, যশোর সংবাদপত্র পরিষদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে), সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মিজানুর রহমান তোতার জন্ম ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ-সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে তিনি বেড়ে ওঠেন। ঝিনাইদহ কে সি কলেজে পড়াকালে তিনি জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় দৈনিক স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে গণমাধ্যমে হাতেখড়ি হয়। পরে তিনি দৈনিক আজাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন। দৈনিক ইনকিলাব বাজারে আসার পর তিনি এই পত্রিকায় থিতু হন। জেলা প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিশেষ প্রতিনিধিও হয়েছিলেন। অবিভক্ত যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা ছাড়াও তিনি প্রেসক্লাব যশোরের একাধিকবারের সভাপতি ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কয়েকটি বই রয়েছে বাজারে। কয়েক বছর আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তার শরীরের একাংশ অকেজোপ্রায় হয়ে যায়। এর পর তিনি আর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। সাংবাদিকতায় ছুটাছুটিও থেমে যায় অনেকটাই। এই সময়কালে তিনি কবিতা লেখালেখিতে মনোযোগী হন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ