রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক বৃদ্ধকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। দুই কিশোরীকে কৌশলে ধর্ষণ করে তার ভিডিওচিত্র ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে তাকে এই সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামের বাসিন্দা নাম আল-আমিন ওরফে আকিল। ৬০ বছরের বৃদ্ধ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে মামলাটি করা হয়েছিল। তিনি পলাতক থাকলেও তার অনুপস্থিতিতেই এই রায় দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগানোর কথা বলে এলাকার ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আল-আমিন। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর এই ঘটনার পর থেকে ওই কিশোরীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন তিনি। একই বছরের ১৫ নভেম্বর ১৩ বছরের আরেক কিশোরীকে কৌশলে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ধর্ষণ করেন তিনি। দুজনকে ধর্ষণেরই ভিডিও করে রাখেন ওই বৃদ্ধ। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে দুই কিশোরী মারা যাবেন বলে তাদের ভয় দেখানো হতো। ওই বৃদ্ধ দুই কিশোরীকে তার কাছে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন। দুই কিশোরী পরে আর না গেলে তাদের ধর্ষণের ভিডিও বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন তিনি।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা জানান, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে নাটোরের আদালতে বৃদ্ধ আল-আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর নাটোরের আদালত থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারার অংশটির বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে রাজশাহীতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন হলে এটি এখানে পাঠানো হয়। এখানে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা প্রদান করেন আদালত।
তিনি আরো জানান, রাজশাহীর আদালতে শুধু ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার বিচার হয়েছে। ধর্ষণের জন্য মামলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারার অংশটির নাটোরের আদালতে বিচার চলছে।
নয়া শতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ