করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে রাজশাহী সদর হাসপাতালকে ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। করোনায় গতবছরের শুরু থেকেই রাজশাহীতে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রতিনিয়ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীর মৃত্যু ঘটছে।
উত্তরবঙ্গের একমাত্র বৃহৎ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিয়ে হিমশিম খান চিকিৎসকরা। রামেকে অন্যান্য রোগীর সাথে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা চলার কারণে বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। তাই রাজশাহী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ফের চালু করার সিদ্ধান্ত হয়।
হাসপাতালটি চালু করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ২ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-২ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন এই চিঠি পাঠান। গণমাধ্যমে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো রাজশাহী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালু হয়নি। এখনো প্রস্তুত হয়নি করোনা ডেডিকেটে শয্যা। দেশব্যাপী আবারো করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
রাজশাহী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলে স্থাপিত রাজশাহী সদর হাসপাতালের ভবনটিতে আগে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথাসহ অন্যান্য রোগের ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হতো। পরবর্তীতে এখানে মেডিসিন, নাক, কান, গলা, হাড় জোড়ার পাশাপাশি অপারেশন সেবাও চালু করা হয়। কিন্তু ২০০৪ সালের দিকে সদর হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। এখানকার সেবাগুলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সদর হাসপাতালের ভবনটিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের কার্যক্রম চালু রয়েছে।
কিন্তু দেশব্যাপী করোনা বৃদ্ধিদে রাজশাহী সদর হাসপাতালটি চালু করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ডিও দিয়েছিলেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
এরই প্রেক্ষিতে রাজশাহীতে করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে সদর হাসপাতালকে ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রশাসনিক অনুমোদন দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যা ও ১৫ আইসিইউ সংবলিত হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুতে সংস্কার কাজে গত বছরের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতা ও সমন্বয়হীনতায় সংস্কার কাজই এখনো পুরোপুরো শেষ হয় নি।
এরমধ্যে সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে? না কী সদর হাসপাতাল আগের কার্যক্রম চালু করবে? না কি ডেন্টাল ইউনিট হিসেবে ব্যবহার হবে? এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে টানাপোড়ন চলছে। তবে নগরবাসীরা সদর হাসপাতালে ফের চিকিৎসা সেবা চালুর দাবি জানিয়েছেন।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান নয়া শতাব্দীকে জানান, রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু করা রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিন দাবি। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সদর হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না। তিনি দ্রুত এই হাসপাতালটি চালুর দাবি জানান।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ