২২ জানুয়ারীর জনসভাকে সফল করতে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা দু’গ্রুপের সংঘর্ষের কারণে পণ্ড হয়েছে। সদস্য সচিবের ভাইরাল হওয়া অডিও বক্তব্যের জের ধরে দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ধাক্কা-ধাক্কি ও মারামারিতে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের লেকভিউ অঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপি’র একাধিক নেতা-কর্মী জানান, শহরের লেকভিউ সম্মেলন কক্ষে জেলা বিএনপি’র প্রস্তুতি সভা চলছিল। দেশব্যাপী জেলায় জেলায় ২২ জানুয়ারীর জনসভা সফল করার জন্য যুবদলের সাথে জেলা বিএনপি’র মতবিনিময় সভা হচ্ছিল।
কিন্তু অধিকাংশ বক্তার বক্তব্যে ঘুরে-ফিরে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আব্দুল আলিম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবাযক সোহেল আহমেদ মানিকের অডিও ফোনালাপের বিষয়টি সামনে আসে। এ নিয়ে প্রস্তুতি সভায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা যায়। এরই মধ্যে আব্দুল আলিমের গাড়ী চালক ইসমাইল হোসেন নীরবের বেফাঁস আক্রমনাত্মক বক্তব্য উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। শুরু হয় ধাক্কা-ধাক্কি, মারপিট ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। মুহুর্তেই ব্যাপক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয় লেকভিউ এলাকায়। পরে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক সোহেল আহমেদ মানিক জানান, সদস্য সচিব আব্দুল আলিম আমাদের নেতা। আমরা তাকে সেভাবেই সম্মান করি। কিছুদিন আগে তুচ্ছ একটা ঘটনায় তিনি যেভাবে আমাকে গালাগালি করলেন,সেটি ভব্যতা-সভ্যতার কোন পর্যায়ে পড়েনা। প্রস্তুতি সভায় অধিকাংশ বক্তার বক্তব্যের জের ধরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুকুল জানান, ভাইরাল হওয়া ফোনালাপ নিয়ে সভায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। অধিকাংশ বক্তাই বলেছেন, দলের কোন নেতা-কর্মী অন্যায় করলে ইনডোরে সংশোধনের চেষ্টা করতে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. সৈয়দ ইফতেখার আলী জানান, গণমাধ্যমে আসার মত তেমন কিছু হয়নি। নিজেদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে ঠিক হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের মোটরসাইকেল চালক ইসমাইল হোসেন নীরব। তিনি সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক। সদর উপজেলা কমিটির পরিচিতি সভার চিঠি নীরব ছিড়ে ফেলার কারণে গত ৩০ ডিসেম্বর তাকে শোকজ করা হয়। শোকজের চিঠি পেয়ে নীরব আব্দুল আলিমকে জানান। নীরবকে শোকজ করার কারণ জানতে চেয়ে আব্দুল আলিম সেল ফোনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সোহেল আহমেদ মানিককে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন ও তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে সেই ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ফাঁস হলে নিন্দার ঝড় ওঠে আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ