মুহাম্মদ তারেক হোছাইন সবে শেষ করেছেন এইচএসসি। লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারের বোঝাটাও টানতে হয় তাকে। তাই বাড়ির পাশের ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন বিদেশী জাতের কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী কুল, থাই আপেল কুল চাষ। কুল চাষই যেন বদলে দিয়েছে তারেকের জীবন। তার পুরো বাগান জুড়েই লাল-সবুজের সমারহে মিশ্রিত বিদেশীর জাতের কুল। বাজারে এই কুলের চাহিদা ও বাজারদর বেশি থাকায় লাভের আশায় তারেকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক।
চটগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের মোকামী পাড়ায় অবস্থিত তারেকের কুল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে লুকিয়ে রয়েছে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরি কুল, থাই আপেল কুল। দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের আপেলের মতো। রঙ আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। খেতে অনেক সুস্বাধু ও মিষ্টি। তাছাড়া পাখি ও বিভিন্ন পোকা-মাকড় থেকে কুলগুলোকে নিরাপদ রাখতে বাগানের চার পাশসহ ওপরে জাল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন।
কুল চাষি মুহাম্মদ তারেক জানান, ছোট বেলা থেকে কৃষির প্রতি আমার বেশ আগ্রহ ছিল। এক সময় ইউটিউবে বিদেশী কুল চাষ দেখে কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। পরে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী কুল, থাই আপেল কুলের ৪০০টি চারা সংগ্রহ করি। এরপর লিজ নেয়া ২ বিঘা জমিতে ১০ ফুট দূরত্ব রেখে ৪০০ চারা রোপন করি। এখন পর্যন্ত এই বাগানে আমার ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক ও কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সঠিক পরিচর্যায় আমার বাগানের প্রতিটি গাছেই প্রচুর পরিমাণে কুল ধরেছে। ১০ মাস আগে লাগানো গাছগুলোতে এ বছর গাছ প্রতি ২৫-৩০ কেজি করে কুল হতে পারে।
দ্বিতীয় বছর থেকে কুলের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে বলে ধারণা করছি। এভাবে টানা ৫-৭ বছর পর্যন্ত ফল বিক্রি করা যাবে। স্থানীয় বাজারে এ কুল পাইকারী ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারদের কুল দিতে হিমসিম খাচ্ছি। সব মিলিয়ে এ বছর তিনি ৫-৬ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। এবং কুলের চাহিদা থাকায় উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে নতুন করে বাগানের পাশের আরও ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে কুল চাষ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক বলেন, মুহাম্মদ তারেক একজন কৃষি প্রিয় যুবক। সে নিজ উদ্যোগে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী কুল, থাই আপেল কুল চাষ করেছে যা কৃষিখাতে ভাল সাফল্য। তার এই কুল চাষ দেখে অনেক যুবক কৃষিতে আগ্রহ হচ্ছে। তাছাড়াও কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক তারেকের কুল বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ