৩০ ডিসেম্বরকে ভোটাধিকার হরণ দিবস হিসেবে পালন করছে খুলনা বিএনপি। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জেলা ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির যৌথ উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়। এ উপলক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় যুবদল ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনায় পরিস্থিতি উত্যপ্ত হয়। এ ঘটনার জেরে মেহেদী হাসান বাপ্পি (২৮) নামে এক যুবদল নেতাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, জেলা যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, স ম আব্দুর রহমান, শেখ জাহিদুল ইসলাম, খান জুলফিকার আলী জুলু, এস এ রহমান বাবুল, আব্দুর রকিব মল্লিক, হাফিজুর রহমান মনি, ওয়াহিদুর রহমান দীপু, মাহবুব হাসান পিয়ারু, তৈয়েবুর রহমান, শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, নুরুল হুদা খান বাবু প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেই সাথে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। সমাবেশে বিএনপির নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সুচিকিৎসার অভাবে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এই সরকারকেই তার দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে।
তারা বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মতো আরও একটি সাজানো পাতানো মধ্যরাতের ভোটের আয়োজন চলছে। কিন্তু এবার তা কোনোভাবেই বাস্তবায়িত হতে দেওয়া হবে না।
এদিকে, মানববন্ধনে ব্যানারের পেছনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ে দলের নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যেই তারা একে অপরের ওপর চড়াও হতে দেখা যায়। এ সময় নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর ও অপর নেতা হাসানুর রশীদ মিরাজকে উত্তেজিত ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়। যদিও নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ অন্যান্য নেতাদের তাৎক্ষনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে, মানববন্ধন শেষে যুবদলের দু’ গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জেরে মেহেদী হাসান বাপ্পি নামে খানজাহান আলী থানা যুবদলের এক নেতাকে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগর যুবদলের সভাপতিক মাহবুব হাসান পিয়ারু অভিযোগ করেন, মানববন্ধন চরাকালীর নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর কেসিসি’র ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনিকে অসম্মান করে ব্যানারের পিছন থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় সে মেহেদী হাসান বাপ্পিকেও ধাক্কা দেয়। ওই সময় বিষয়টি সমাধান হলেও মানববন্ধন শেষে সাগর ২১নং ওয়ার্ডের কয়েকজন শ্রমিককে ভাড়া করে এনে আলতাফ ও মিজানুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে বিএনপি অফিসে এসে আমীর এজাজ খান, আবু হোসেন বাবুসহ সিনিয়র নেতাদের গালিগালাস করে। পরে যুবদল নেতা বাপ্পি বিএনপি অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে সদর থানার মোড়ে গেলে আলতাফ ও মিজানুর রহমান বাবু পিছন থেকে তার ঘাড়ে চাকু মারে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল, পরে খুমেক হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়টি বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর সামনেই ঘটেছে। তিনি সাগরকে যুবদল থেকে বহিষ্কার এবং পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহিত করেছেন বলেও উল্লেখ করেন।তবে নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর এ প্রতিবেদককে বলেন, অনেক নতুন মুখ মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ায় চেনা-পরিচয় না থাকার কারণে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এছাড়া অনেক লোক হওয়ায় ছবি তোলার জন্য ব্যানারের পেছনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করায় এমনটি হয়েছে। তবে, এটি ফলাও করার মত কিছু না।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ