তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে প্রচার বেশ জমে উঠেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে প্রতীক পাওয়ার পর বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের (নৌকা) ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা স্বতন্ত্র (হাতি মার্কা) তৈমুর আলম খন্দকার।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বিকাল ৩টায় গণসংযোগ শুরু করেন টানা দুই বারের মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আইভী।
এ সময় মেয়র আইভী ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ আমি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নির্বাচনি প্রচার শুরু করলাম। মেয়র পদে সবাই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। সব প্রার্থীকে সম্মান জানিয়ে আমি প্রচার চালিয়ে যাব। আশা করি, ইনশাআল্লাহ নৌকা জয়যুক্ত হবে। মা-বোনদের ভোটে নৌকা জয়যুক্ত হবে।
আইভী বলেন, সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি কোনো ট্যাক্স বাড়াইনি। আমি যদি ট্যাক্স বাড়াতাম তবে গত ৫ বছর এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি কেন? হঠাৎ করে এ ইস্যুতে স্ট্যান্টবাজি করে মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। সিটি করপোরেশনে যেটা ট্যাক্স আছে জনগণ সেটাই দিচ্ছেন। হঠাৎ কাকা (স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার) বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছেন। এ বিভ্রান্তি কারো জন্যই কাম্য নয়।
নৌকার এই প্রার্থী গণসংযোগের সময় মোল্লাবাড়ি এলাকায় শাহ সুফী ফকির হাসান আলী মুজাদ্দেদীর (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। রাত সাড়ে ৭টায় তিনি যান গোদনাইল ক্যানেলপাড় এলাকায়। সেখানে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট চান।
অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দুপুরের আগেই সিদ্ধিরগঞ্জ ১নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকা থেকে প্রচারণা শুরু করেন। বিভেদ ভুলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা সবাই এখন তৈমুরে একাট্টা হয়েছেন। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
প্রচারকালে তৈমুর আলম ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আমার রাজনীতি শুরু রাস্তায় খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে। আমি আপনাদেরই লোক। আমি এই নগরীর লোক, নগরবাসী আমার প্রিয়জন। আমি গরিবের পেটে লাথি মারব না, মারতে পারব না, আর যদি কেউ মারে তাকে প্রতিহত করব-এটাই তৈমুরের নীতি। সন্ধ্যার পরও তৈমুর আলমকে গণসংযোগ করতে দেখা যায়। এসময় তিনি ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিকে, তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পদক এটিএম কামালকে ফোন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মোবাইল ফোনে তিনি বলেছেন- তৈমুর সাহেব জনগনের দাবির মুখে, পরিবেশ পরিস্থিতিতে প্রার্থী হয়ে গেছেন। তিনি এখন জনতার প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বিজয়ী হলে জনতার বিজয় হবে। তিনি ব্যর্থ হলে কিন্তু সরকার বলবে বিএনপির একজন নেতা স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজয় বরণ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আপনারা বিবেক বিবেচনা করে যা ভালো মনে হয় করবেন। আপনাদের যার যার অবস্থান থেকে আপনারা আপনাদের কর্তব্য ঠিক করে নেবেন।
বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পদক এটিএম কামালকে মোবাইল ফোনে এসব কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ