ঢাকা, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রংপুরে কোল্ড ইনজুরিতে বোরো বীজতলা

প্রকাশনার সময়: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:৩৬

দ্বিতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় কোল্ড ইনজুরি হয়ে রংপুরের ২৫ ভাগ বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। হলুদ বা বিবর্ণ রঙ ধারণ করে মরে যাচ্ছে ধানের বীজ। নষ্ট বীজতলা নিয়ে দিশেহারা রংপুরের কৃষককুল।

কৃষকরা জানান, হরতাল অবরোধে নানা হয়রানি সত্ত্বেও অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে সার বীজ সংগ্রহ করেছেন তারা। এরপর কোল্ড ইনজুরি তাদের নতুন করে বিপদে ফেলে দিয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ ভারপ্রাপ্ত কামরুল হাসান জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জেলার তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে এবং তা ১১ থেকে ১৫ ডিগ্রীতে স্থায়ী হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর জেলার নব্দীগঞ্জ, মীরবাগ, বল্লভবীষু, সাধু, বড়ুয়াহাট, আমতলীর বিভিন্ন বীজতলা চার ভাগের এক ভাগ বীজতলা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড কুয়াশায় কোল্ড ইনজুরির কারণে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

অনেকের বীজতলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও আবার চারা রোপণ করে বিপদে পড়েছে কৃষকরা। কোল্ড ইনজুরি শিকার রোপণ করা বিবর্ণ বীজ তুলে ফেলে আবার নতুন করে রোপণ করতে হচ্ছে। এতে করেও তারা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

কৃষি কর্মকর্তা সমীর ঘোষ বলেন ডিসেম্বরের মাসে যে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে তার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। তবে এটা তেমন বেশি ক্ষতি নয়। ক্ষয়-ক্ষতির পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা হয়নি। ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে।

জানা গেছে মার্চের প্রথম সপ্তাহ বোরো লাগানোর শেষ সময়। বীজতলার যেটুকু ক্ষতি হচ্ছে তা পুষিয়ে ওঠার জন্য বীজতলা পরিচর্যা, কুয়াশা ঝেড়ে ফেলাসহ এবং প্রতি গোছায় ৪ থেকে ৫টির পরিবর্তে ১ থেকে ২টি সুস্থ-সবল চারা রোপণ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উদ্যান শামীমুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে রংপুরে বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হাইব্রিড ১ হাজার ৭৩৪ হেক্টর, উফশী ৬ হাজার ১৫ হেক্টর। একইভাবে গাইবান্ধায় হাইব্রিড ১ হাজার ২৮ হেক্টর, উফশী ৬ হাজার ৫৮২ হেক্টর, কুড়িগ্রাম হাইব্রিড ১ হাজার ৭৯ হেক্টর, উফশী ৫ হাজার ১২৬ হেক্টর, লালমনিরহাট হাইব্রিড ৮২৮ হেক্টর, উফশী ২ হাজার ১৯১ হেক্টর, নীলফামারী হাইব্রিড ১ হাজার ৬৮ হেক্টর, উফশী ৩ হাজার ৫১৬ হেক্টর, দিনাজপুর হাইব্রিড ৫৯২ হেক্টর, উফশী ১০ হাজার ৭২৬ হেক্টর, ঠাকুরগাও হাইব্রিড ১৮৪ হেক্টর, উফশী ৩ হাজার ৮৬৫ হেক্টর এবং পঞ্চগড়ে হাইব্রিড ১৬০ হেক্টর, উফশী ১ হাজার ৯৮৯ হেক্টর।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, তাপমাত্রা বাড়লে বীজতলা আবার সবল হয়ে উঠতে শুরু করবে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে বীজতলা ভালো থাকে। তিনি রাতে বীজতলা পানি দিয়ে ভরে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেন। মাঠ পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ ছাড়াও ব্যাভিস্টিন, টিল পটাশ স্প্রে করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরোও বলেন, পরে কোনো বালাই বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে বোরো ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, ২০২০-২০২১ সনে রংপুর অঞ্চলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার ২ হেক্টর। এই পরিমাণ জমি থেকে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ লাখ ১১ হাজার ১২৪ মেট্রিক টন।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ