ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে ‘গরিবের শীতের মার্কেট’

প্রকাশনার সময়: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:২৬

টাঙ্গাইলে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় জমে উঠেছে গড়ম কাপড়ের ক্রয়-বিক্রি। সামর্থবানরা শহরের অভিজাত বিপণিবিতান থেকে কেনা কাটা করলেও সামর্থ না থাকায় কিনতে পারছে না নিম্নমধ্যবিত্ত ও গরীব আয়ের মানুষেরা। নিম্নমধ্যবিত্ত ও গরীব মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল জেলা শহরের কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় গড়ে ওঠা গরম কাপড়ের দোকান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এখান থেকে কাপড় ক্রয় করে থাকেন। তবে এটি ‘গরিবের শীতের মাকেট’ হিসেবে পরিচিত থাকলেও অনেক মধ্যবিত্তরাও এখান থেকে শীতের গরম কাপড় ক্রয় করেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা ও কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় কয়েশ’ দোকান বসেছে। ক্রেতাদেরও বেশ ভিড়। নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও এখান থেকে কাপড় কিনতে দেখা গেছে। এই মাকেটগুলোতে ১০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত দামের শীতের কাপড় পাওয়া যায়।

ক্রেতা মনির হাসেন বলেন, ‘শহরের মার্কেটগুলোতে দাম বেশি থাকায় কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় গড়ে ওঠা গরম কাপড়ের দোকান কাপড় কিনতে এসছি। এখানে কম দামে বেশ ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। শুধু আমি নই, আমাদের এলাকার অনেকেই এখানে কাপড় কিনতে আসেন।’

বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কাপড়ের দাম বেল্ট প্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। যা বিক্রি করে অনেকের খরচই উঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তারপরও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন অল্প টাকায় শীতের কাপড় আমরা বিক্রি করছি।

পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী পৌরসভার কাগমারা এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করতে কোট চত্ত্বর এলাকায় পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করছি। এমনিতেই এ ব্যবসা বছরের ৩ থেকে ৪ মাস করতে পারি। এ বছর প্রথম দিকে খুব বেশি শীত না পড়ায় তেমন বেচা কেনা হয়নি। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে শীত বাড়তে থাকায় বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ বছর কাপড়ের দাম বেশ বেড়েছে। চট্টগ্রামে মাল আনতে গেলে সেখানে বেল প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেশি দাম রাখে। কারণ জানতে চাইলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলেন, করোনা থাকায় খুব বেশি মাল আমাদের দেশে আসেনি। চাহিদা বেশি থাকায় বাড়তি দাম নিচ্ছেন তারা। গত বছর পুরাতন শীতের কাপড়ের যে বেল্ট সর্বনিম্ন ২০ থেকে ২১ হাজার টাকায় আনা যেত, এ বছর সেই বেল্ট আনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ২৪থেকে ২৫ হাজার টাকায়। তাই লাভ কিছুটা কম হচ্ছে।

ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘একদিকে মালের দাম বেশি, অন্যদিকে গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় লাভ করতে পারছি না। এতে করে সংসার চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ব্যবসা যদি সারা বছর করা যেতো তবুও চলতো। বিক্রি হয় মাত্র ৩ থেকে ৪ মাস।’

ব্যবসায়ী জহুরুল বলেন, ‘আমরা সাধারণত সোয়েটার, ট্র্যাকশুট, বিভিন্ন ধরনের গরম জামা, মোজা, টুপি, বাচ্চাদের কাপড়, প্যান্ট-কোট, চাদর, কম্বল, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় বিক্রি করে থাকি। আমরা চিটাগাং থেকে বেল্ট হিসেবে এইসব শীতের কাপড় নিয়ে আসি। বিভিন্ন ধরনের বেল্ট বিভিন্ন রকমের দাম। বল ভাঙার পর কাপড়গুলোর একটা গড় মূল্য নির্ধারণ করে আমরা বিক্রি শুরু করি। খরচ বাদে যা থাকে তাতে মোটামুটি ভালোই লাভবান হয়।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ