শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও কৃষিকাজ করে জীবিকা উপার্জন করছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের নাগপুর গ্রামের শারিরীক প্রতিবন্ধী দরিদ্র যুবক মো. কামাল উদ্দিন (৩২)। মা, স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে তার অভাবের সংসার।
তবুও তিনি থেমে নেই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন সামনে। শত কষ্ট ও প্রতিকুলতার মাঝেও তার দূরন্ত চলা। ঘরে-বাইরে, মাঠে সকল জায়গায় তার সংগ্রামী পথচলা। কষ্টকে জয় করে এগিয়ে চলছেন সামনের দিকে। প্রতিবন্ধকতার বাধাকে তুচ্ছ করে এগিয়ে চলার এ উদাহরণ এলাকাবাসীর কাছেও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
২০০১ সালে ৫ম শ্রেণী পাশ করে অভাবের তাড়নায় কাজের সন্ধানে চলে যান ঢাকায়। চাকুরি নেন গার্মেন্টসে। ভালোই চলছিল তার দিন। কিন্তু হঠাৎ একদিন তার জীবনে নেমে আসে কালো অন্ধকার। ২০০২সালে গার্মেন্টস থেকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে গাড়ি চাপায় তার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে আজ পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছেন। হয়ে পড়েছেন অসহায়।
সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির পাশেই জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করতে তিনি স্ক্রেচে ভর করে জমির মাটি সমান করছেন। একহাতে স্ক্রেচ, অন্যহাতে মই। টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে। তার এই চলা বহু কষ্টের কেউ সাহায্য করেননি।
জানতে চাইলে কামাল বলেন, ‘কেলা কইরা দিবো। নিজের কাজতো আর ফালতারিনা। কষ্ট অইলেও করন লাগবো।’
তিনি জানান, হাট-বাজারে যাওয়াসহ সংসারের সকল কাজ তাকেই করতে হয়। স্ক্রেচে ভর করে সকল কাজ তিনি করেন। নিজে চলাফেরার জন্য একটি ভাঙা ক্রেচ ব্যবহার করতেন। স্থানীয় সাংবাদিক দৈনিক নয়া শতাব্দীর প্রতিনিধি প্রভাষক আমিনুল হক বুলবুলের মাধ্যমে তিনি একটি নতুন স্ক্রেচ পান। সেই নতুন স্ক্রেচে ভর করেই তিনি চলাফেরা করেন।
দরিদ্র কামাল উদ্দিন জানান, তার একটি কৃত্রিম পায়ের প্রয়োজন। দেশের বৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে সামান্য হলেও ঘুচবে তার দুঃখ-কষ্ট।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত ভুইয়া মিন্টু জানান, কামালের শারীরিক অক্ষমতা থাকলেও সে কখনো বসে থাকেনি। নিজের মতো করে চলার জন্য সব সময় চেষ্টা করে। আমি তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ