বয়স মাত্র ১৪ বছর। নেশা তার গান গাওয়া। পাননি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গান শেখার কোন সুযোগ। নেই কোন বাদ্যযন্ত্র। তবুও ছোট বেলা থেকেই হাট বাজারে গান গেয়ে ছড়াচ্ছেন মুগ্ধতা। হাতই তার বাদ্যযন্ত্র। হাটে বাজারে ঘুরে চায়ের দোকান অথবা যেকোন জায়গায় লোকজন দেখলেই গান শুরু করেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শালুয়াভিটা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আল আমিন শেখের ছেলে সুমন শেখ। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি বাড়তি আগ্রহ সুমনের। যেখানেই গান বাজনা হতো সেখানেই সে ছুটে যেতো। এভাবেই নিজে নিজেই গান গাইতে শুরু করেন। হাটে বাজারে ঘুরে ঘুরে চায়ের দোকান অথবা যেকোন স্থানে লোক সমাগম দেখলেই গান গাওয়া শুরু করে সুমন। হাতে কয়েন নিয়ে টেবিল বাজিয়ে সুর তুলে মানুষকে আকৃষ্ট করে কাছে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে ঘুরে গান গায় সুমন। মানুষ তার গান শুনে খুশি হয়ে টাকা দেয়। সেই টাকা তুলে দেয় পরিবারের হাতে।
এলাকাবাসী জানান, সুমন ছোট বেলা থেকেই গান ভক্ত। যেখানে গানের অনুষ্ঠান হতো সেখানে সে ছুটে যেতো। এভাবে কোন প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা ছাড়াই গান রপ্ত করেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গান গায়। একটা টেবিল আর দুটো কয়েন তার বাদ্যযন্ত্র। সুমনের গান শুনে মানুষ ভীড় জমায় এবং অনেকে খুশি হয়ে টাকা উপহার দেয়।
সুমনের বাবা আল আমিন শেখ জানান, ছোট বেলা থেকে সুমনের গানের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ। যেখানে গানের অনুষ্ঠান হতো সেখানে ছুটে যেতো। এভাবে আস্তে আস্তে গানের প্রতি ভালোবাসা বাড়তে থাকে সুমনের। কোন রকম বাদ্যযন্ত্র ছাড়া গান গেয়ে মানুষকে মুগ্ধ করে। গান শুনে অনেকে খুশি হয়ে টাকা দিয়ে সহায়তা করে। যদি সরকারিভাবে কোন সুবিধা পেতো তাহলে ভবিষ্যতে আরো আগাতে পারতো। তাই সুমনের প্রতিভা বিকাশে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন সুমনের পিতা ও স্বজনেরা।
সুমন বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে গান ভালোবাসি। মানুষের মুখে এবং মোবাইল ফোনে গান শুনে শুনে গান গাওয়া শিখেছি। দুহাতে দুটো কয়েন নিয়ে টেবিল বাজিয়ে নানান রকম গানে সুর তাল মেলাতে পারি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাট বাজারের চায়ের দোকান এবং লোক সমাগমের মধ্যে গান গাই। আমার গান শুনে চারদিক থেকে মানুষ ছুটে আসে। গান শুনে অনেকে টাকা দেয়। আমি সেই টাকা আমার পরিবারের হাতে তুলে দেই। যদি কোন সহায়তা পেতাম তাহলে আমি আরো ভালো করতে পারতাম।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ