ফেনীর পরশুরামের দক্ষিণ কোলাপাড়া এলাকায় পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু ও তার সহযোগিদের পিটুনিতে দোকান কর্মচারী শাহীন চৌধুরী নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার দুইজন শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরা মুনা ওমর ফারুক চৌধুরী আজিম ও এনায়েত হোসেন আকাশের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাউতলী গ্রামের আবু বকর ছিদ্দিক নামে ফিস ফিড দোকানের মালিক বাবুলের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন শাহীন চৌধুরী। ওই দোকান থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টোর ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে পরিচিত আবুল হাসেম ৭ লাখ টাকার মালামাল বাকিতে নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তা পরিশোধ না করে সন্ধ্যায় পরিশোধ করা হবে বলে জানান আবুল হাসেম। সন্ধ্যায় দোকান মালিকের নির্দেশে আবারও বকেয়া টাকা চাওয়ায় আবুল হাসেম ক্ষুদ্ধ হন।
এনিয়ে দোকান কর্মচারী শাহীন চৌধুরীর সঙ্গে হাসেমের বাকবিতণ্ডা হয়। আবুল হাসেম মুঠোফোনে ইউপি চেয়ারম্যান ভুট্টুকে খবর দেন। চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টোর নেতৃত্বে দুটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন সেখানে গিয়ে শাহীন চৌধুরীকে মারধর করেন। পরে চেয়ারম্যানের পক্ষে আরও দুটি মোটরসাইকেলে করে চার যুবক সেখানে উপস্থিত হয়ে শাহীন চৌধুরীকে পেটান।
একপর্যায়ে শাহীন চৌধুরী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ অবস্থায় চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগীরা সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর কর্মচারী শাহীন চৌধুরী অচেতন হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহীনকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহত শাহীন স্থানীয় মির্জানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাউতলী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে।
সূত্র আরো জানায়, এ ঘটনায় নিহত শাহীনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদি হয়ে চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টুসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরশুরাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। রাতেই এনায়েত হোসেন আকাশ (২২), রহিম (২১), জাহিদ হোসেন মজুমদার আরিফ (৩৪) ও ওমর ফারুক চৌধুরী আজিজ (২৬) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় নামাজে জানাযা শেষে শাহীন চৌধুরীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ওসি খালেদ হোসেন জানান, পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে দোকান কর্মচারী শাহীন চৌধুরীকে পেটানোর দায় স্বীকার করেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ