ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কলাপাড়ায় মাশরুম চাষে যুবকের সফলতা

প্রকাশনার সময়: ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:১৯

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রথমবারের মতো বানিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষে সফল হয়েছেন এক যুবক। বর্তমানে এ যুবকের খামারে রয়েছে ১ হাজার খড়ের স্পন প্যাকেট। আর এ প্যাকেট থেকে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মাশরুম বিক্রি করে মাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। তার এ সাফল্যে সাড়া ফেলেছে গোটা এলাকাজুড়ে। করোনাকালীন সময়ে বেকারত্ব ঘোচাতে মাশরুম চাষ শুরু করলেও বর্তমান উৎপাদনে মেটাতে পারছেন না ক্রেতাদের চাহিদা।

সূত্র জানায়, পটুয়াখালী পৌর শহরের দক্ষিন কালিকাপুর এলাকার সুশান্ত মজুমদারের ছেলে সৌমিত্র মজুমদার শুভ। ২০১৭ সালে এলএলবি পাশ করে ঢাকায় এক আইনজীবির সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সালের করোনাকালীন সময়ে তেমন একটা আয় না থাকায় এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। বেশ কিছুদিন বেকার থাকার পর জার্মানির খালাতো বোনের পরামর্শে আগ্রহী হন মাশরুম চাষে।

এরপরর সাভারের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টারে দুই মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। চলতি বছর এপ্রিল মাসে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির নবাবগঞ্জ গ্রামে খালার বাড়িতে ৫০ টি স্পন প্যাকেট দিয়ে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় ওই বাড়িতেই ২০ শতাংশ জমিতে দুটি সেডের মাধ্যমে বানিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন মাশরুম খামার।

বর্তমানে খামার থেকে প্রতিনিয়ত ১৫ কেজি করে মাশরুম পাচ্ছেন তিনি। তাতেও মেটাতে পারছেন না ক্রেতাদের চাহিদা। তবে সরকারী সহায়তা ও স্বল্প সুদে ঋন সহায়তা পেলে এ খামার বৃদ্ধির মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।

মাশরুম চাষী সৌমিত্র মজুমদার শুভ জানান, খড়, কাঠের গুড়া, গমের ভূষি, তুষ ও চুন দিয়ে আমরা নিজেরাই মাশুরুমের বীজ তৈরী করি। পরে বীজের সঙ্গে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টার থেকে আনা টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা ও দিনে তিনবার পানি স্প্রে করার ২০ দিনের মাথায় শুরু হয় ফলন। এ কাজে তেমন একটা পরিশ্রম নেই। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ কেজির মতো অর্ডার আসে। তবে বেশির ভাগ অর্ডার অনলাইনেই আসে। খামার আরো বড় করতে পারলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব বলে আশবাদী অদম্য এ যুবক।

পরামর্শ দেয়া খালাতো বোন রত্না বিশ্বাস জানান, বিদেশে নিত্য দিনই সবাই মাশরুম খেয়ে থাকেন। এর পুষ্টিগুন অনেক বেশি। তবে এ দেশের মানুষ মাশরুমের গুন সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। শুভ যখন বেকার দিন কাটাচ্ছিল তখন ওকে মাশরুম চাষের পরামর্শ দিয়েছিলাম। দেশে এসে দেখলাম ও ভালই খামার করেছে। অনেক টাকাও আয় করছে। ওকে নিয়ে গর্ববোধ হচ্ছে।

শুভ’র খালাতো ভাই জীবন বিশ্বাস জানান, মাশরুম চাষে আগ্রহী হওয়ার পরই শুভকে আমাদের পরিত্যক্ত জমিতে খামার গড়ে তুলতে বলি। শুভ ২০ শতাংশ জমির উপর দুইটি সেড তৈরী করে মাশরুম চাষ করছে। ওর সফলতা এসেছে।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, মাশরুম চাষ একটি লাভজনক পেশা। এর পুষ্টিগুনও অনেক বেশি। মাশরুম চাষী শুভকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া এই এলাকার কোন যুবক মাশরুম চাষে আগ্রহী হলে তাকে সকল ধরনের সহযোহিতা করা হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ