ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রায়হান হত্যা : নোমানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ

প্রকাশনার সময়: ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:৫৫ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:২২

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার একমাত্র পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের কোন মালামাল না পাওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ থানার পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া এ প্রতিবেদনের পর এবার আদালত পলাতক নোমানের ব্যাপারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পত্রিকা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে নোমান আদালতে উপস্থিত না হলে তার অনুপস্থিতিতেই শুরু হবে বিচার।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আমিরুল ইসলাম এই নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এমএ ফজল চৌধুরী। তিনি বলেন, পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোক করতে হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পায়নি। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।’

এমএ ফজল আরও বলেন, ‘আজ ধার্য তারিখ ছিল পরবর্তী আদেশের জন্য। আদালত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় নোমানের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হবে। এর মাধ্যমে তাকে অবহিত করা হবে যে, তিনি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য শুরু হবে।’

বুধবার ধার্য তারিখে আদালতে রায়হানের মা সালমা বেগমসহ অন্যান্য স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এসময় রায়হানের মা সালমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নোমান যেমন পলাতক হয়েছে তার মালামালও পলাতক করেছে। তাই অতিতে সিলেটে শিশু রাজন হত্যা মামলার আসামিকে যেমন ইন্টারপোলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো আমি আশা করব নোমানকেও ইন্টারপোলে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও তার মালামাল ক্রোকের পরোয়ানার বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে সেদিন পরোয়ানার প্রতিবেদন না পাওয়ায় শুনানি পিছিয়ে আজ ২২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে, আজ আদালতে শুনানিকালে রায়হান হত্যার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদকে আদালতে হাজির করা হয়।

গেল বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটির তদন্তে প্রথমে পুলিশ ছিল। পরে সে বছরের ১৩ অক্টোবর মামলাটি স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। চলতি বছরের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১ হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

যে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়, তাদের পাঁচজনই পুলিশ সদস্য। তারা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ।

অভিযুক্ত অপরজন আব্দুল্লাহ আল নোমান, যার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে। তার বিরুদ্ধে ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ গায়েব করার অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ