ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেরপুরে মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ

প্রকাশনার সময়: ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:১৪

শেরপুরের মাঠে মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ। আর সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। জেলা সদরসহ ৫ উপজেলায় সরিষার আবাদ হলেও সবচেয়ে বেশি ও বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন নকলা উপজেলার কৃষকরা। জেলার ৫ উপজেলাতেই কমবেশি সরিষার আবাদ হলেও বিশেষ করে সদর উপজেলা এবং নকলা উপজেলার চরাঞ্চলের বিসৃ্তর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদে ছেয়ে গেছে। ওইসব এলাকার চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ মাঠে দু’চোখ যতদুর যায় ততদুর হলুদ আর হলুদ এবং সরিষা ফুলের ম-ম গন্ধে ভরে গেছে গ্রামের পর গ্রাম।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, গত তিন বছরের মধ্যে এবার সরিষার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। দিন দিন জেলায় সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরাও ঝুকছে সরিষা আবাদে। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সরিষা আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিলো ৭ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে, অর্জিত হয় ৬ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৭ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্র নিয়ে অর্জিত হয় ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর। ওই বছর দেশে করোনাকালীন নানা সমস্যা এবং চরাঞ্চলে বন্যা ও বৃষ্টির পানি দেরিতে নেমে যাওয়ায় অনেকেই আবাদই করতে পারেনি। এরপর চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে এবং ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়েছে গত দুই বছরের চেয়ে বেশি ৭ হাজার ২১৫ হেক্টর।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, একর প্রতি সরিষা আবাদে খরচ পড়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এবার জমি তৈরি করেত ট্রাক্টরের হালচাষে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ বেশি পড়েছে। কৃষকরা আশা করছেন প্রতি একরে সরিষা উৎপাদন হবে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মণ। মওসুমের সময় দাম কিছুটা কম থাকলেও প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে মওজুদ করে রেখে বছরের শেষে বিক্রি করলে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করা যায় বলে জানান কৃষকরা। এছাড়া সরিষা আবাদ উঠে গেলে ওই জমিতে সরিষা গাছের আগাছা মাটিতে পড়ে প্রচুর জৈব সার তৈরি হয়। ফলে পরবর্তি বোরো আবাদে সারের পরিমান অনেক প্রয়োজন হয়। সরিষার খড়ও জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে কৃষকরা।

সদর উপজেলার ধলা গ্রামের রহুল মিয়া জানান, আমরা আমন আবাদের পর কয়েক মাস পরে থাকা জমিতে এই সরিষার আবাদ করে বাড়তি আয় করি। এবার সোয়া একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। এ সরিষা উঠিয়ে বোরোর আবাদ করতে অর্থনৈতিক সুবিধা পাবো।

নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা গ্রামের সরিষা চাষি আলহাজ্ব মাহবুবর রহমান জানান, সরিষা আবাদ খুবই লাভজনক বিধায় এবারও আমি ৩ একর জমিতে চাষ করেছি। আশা করছি এবারও বাম্পার ফলন হবে। সেক্ষেত্রে আমি দ্বিগুন লাভের আশা করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মুহিত কুমার দে জানান, সরকার প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রান্তিক চাষিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করেছে। এবার জেলায় মেটা ৬ হাজার কৃষককে এক বিঘা করে মোট ৬ হাজার বিঘা জমির জন্য বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়াও অনুকুলে রয়েছে বলে আমরা এবার সরিষার বেশ ভালো ফলনের আশা করছি।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ