ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাণীশংকৈলে সরিষার হলুদে ফুলে কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশনার সময়: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩৯

হলুদ গালিচায় প্রকৃতি মেলেছে পাখা দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ। দু’চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। আঁকাবাঁকা রাস্তার দু’পাশে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন মহিমায়। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে।

প্রকৃতি হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার মাঠের পর মাঠ। খেতের পর খেত সরিষা আর সরিষা। হলদে সাজের সমাহার ইঙ্গিত করছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।

উপজেলার বাচোর, লেহেম্বা, হোসেনগাঁও, রাতোর, নন্দুয়ার, ধর্মগড় ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের সুষমা শোভা পাচ্ছে দিকে দিকে। গুনগুন শব্দে মধুলোভী মৌমাছিরা এখন এক ফুল থেকে অন্য ফুলে বসে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলতি রবিশস্য মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরিষাখেতে রোগবালাই কম হওয়ায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৬ শত কৃষককে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এবং নন্দুয়ার ইউনিয়নে এবারই প্রথম একসাথে ৫০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সেই সরিষার বীজ বিনামূল্যে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রজাপতির দল ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মৌমাছির ভনভনানিতে মুখর সরিষার বিস্তৃত মাঠ। ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হাজারো মৌমাছির দল। এদিকে সরিষার ভালো ফলনে কৃষকদের মুখেও সোনা রাঙা হাসি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম জানান, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত মৌসুমে সরিষার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চলতি মৌসুমে উপজেলায় এবার ৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে ১৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা বেশি চাষ হয়েছে।

উপজেলার লেহেম্বা গ্রামের সরিষা চাষি আব্দুল মতিন জানান, তিনি এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। গাছ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনও আশা করছেন। একই গ্রামের সরিষা চাষি হাফিজুর রহমান বলেন, গত বছর সরিষার চাষ না করলেও তিনি এ বছর চাষ করেছেন। কারণ, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি। তাই তিনি এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করেছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, সরিষা খুব প্রয়োজনীয় একটি ফসল, তাছাড়া সরিষা আবাদের পরই কৃষকরা দুটি ধানের আবাদ করতে পারছে । যা থেকে বেশি আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে । গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর প্রধান কারণের মধ্যে আছে, বাজারে সরিষা এবং ভোজ্য তেলের দাম বেশি। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত মৌসুমে আলু চাষ করে অনেকের লোকসান হয়েছে। এবার তাঁরা আলুর আবাদ কমিয়ে দিয়ে জমিতে সরিষার চাষ করছেন। তবে আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদী।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ