শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর শরীয়াতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে অসংখ্য দুর্নীতি ও প্রতারণার বিচারের দাবীতে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার দাতা সদস্য, অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষার্থী অভিভাবকগণ। লিখিত এই অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সুপার দায়িত্বকাল ২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধি মাদ্রাসার আয় ব্যয় ও ব্যাংক হিসাব মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের কাছে দেননি। তিনি ২০১৫ সালে স্বেচ্ছায় কর্মস্থল থেকে চলে গেলে ভারপ্রাপ্ত সুপারের মাধ্যমে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন সুপার নিয়োগ করা হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত সুপার মাদ্রাসায় যোগদান করার পরেও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে চলে যেতে বাধ্য করেন এই সুপার। পরবর্তীতে তিনি অনিয়মের মধ্য দিয়ে পুনরায় সুপার পদে যোগদান করেন। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির সাক্ষর জাল করে তিনি আয় ব্যয় হিসাবে ছলচাতুরী করেন। অন্য প্রতিষ্ঠানের রুহুল আমিন নামে একজন ব্যক্তিকে সহ-সুপার দেখিয়ে হাজিরা খাতা নিয়ন্ত্রণ করতেন। হাজিরা খাতায় ১৮ জন শিক্ষক কর্মচারীর নাম থাকলেও সুপারের চাহিদা পূরণ করতে না পারায় সিংহভাগ এমপিও থেকে বাদ পড়ে। সুপার অর্থ আত্মসাতের স্বার্থে একাধিক হাজিরা খাতা ও ভুয়া ভাউচার ব্যবহার করতেন। নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করেন তিনি। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে নিজের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। মাদরাসার উন্নয়নে তিনি কোন কাজ করেন না।
অভিযোগকারীরা জানায়, সুপারের সকল অনিয়মের কথা অভিযোগে লেখা সম্ভব হয় নাই। এর বাইরেও সুপার উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন নেয়, করোনা কালেও বেতন ও অতিরিক্ত ফি আদায় করায় শিক্ষার্থীরা সুপারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এই সুপার মাদ্রাসার জন্য মঙ্গল জনক না। এই প্রতিষ্ঠানকে তিনি দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রম করেছেন।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা শাহ মো. সেকান্দার মোল্যা বলেন, অত্র এলাকায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। শিক্ষাকে সহজ লভ্য করতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করি। এই সুপার মাদ্রাসাটিকে দুর্নীতির আখড়া করে ফেলেছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী অতিষ্ট। সে কমিটিকে তোয়াক্কা করে না। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধি মাদ্রাসার আয় ব্যয় হিসাব কটিকে দেয়নি। তাছাড়া এর কোন হিসাবও সুপারের কাছে নাই। তিনি শুধু আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। মাদরাসার ভবন ও শিক্ষার উন্নয়ে তার কোন চেষ্টা নাই।
এই বিষয়ে সুপার আব্দুল হালিমের সাথে কথা বলা হয়। কিন্তু তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নয়া শতাব্দী/এস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ