নীলফামারীর সৈয়দপুরে মুক্তিযুদ্ধের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কাহিনী তুলে ধরে মঞ্চস্থ হলো ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটক। নাটকে সত্য ঘটনার দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়েছে।
গতকাল (১৯ ডিসেম্বর) রাতে মঞ্চায়ন হয় শহরের গোলাহাট বধ্যভূমিতে। ঐতিহাসিক ওই বধ্যভূমিতে ৪৪৮ জন হিন্দু মাডোয়ারিকে নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে হত্যা করা হয় তাদের।
চারিদিকে উজ্জ্বল আলো, বধ্যভূমির খানাখন্দ জুড়ে একাত্তরের বিভিষিকার চিত্র। সৈয়দপুর শহরের ঘরে ঘরে ঢুকে পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের দোসর বিহারীরা কিভাবে বাঙালি নিধন করেছিল ওই মর্মান্তিক দৃশ্য ফুটে ওঠে নাটকে। গত এক মাস ধরে চলে গভীর রাত অবধি ওই নাটকের মহড়া। প্রায় ৩০০ কলাকুশলী অংশ নেন নাটকটিতে।
৯ মাসের যুদ্ধ, হত্যাযজ্ঞ, নারী ধর্ষণ এমন উপজীব্য নাটকটিতে। এছাড়া তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা, গণআন্দোলন, বাঙালি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং হত্যাকারীদের দোর্দণ্ড প্রতাপ নাটকটির চরিত্র চিত্রন।
সারাদেশে ৬৪টি জেলায় এই প্রথমবারের মতো গণহত্যার ওপর পরিবেশ নাটক মঞ্চায়ন হচ্ছে। ওই নাটক ভাবনা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর। তিনি গতকাল রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে গোলাহাট বধ্যভূমিতে ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটকটির উদ্বোধন করেন।
নাটকটি ঘিরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান, সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন ও সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী। মুজিব জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ওই নাটকটি মঞ্চায়ন করা হয়।
এটি ‘বধ্যভূমির শহর’ একটি পরিবেশ থিয়েটার। দীর্ঘদিন পর হলেও সৈয়দপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিভিষিকাময় দিনগুলোর চিত্র নাটকের দেখতে পেরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ