বিলুপ্তির পথে ভিটামিন ও আয়রন যুক্ত সবজী ঢেঁকি শাক। বাহারি রকমের শাকসবজির মধ্যে আবহমানকাল থেকেই ঢেঁকি শাক গ্রামবাংলার অতি পরিচিত ও অতি প্রিয় একটি শাক। বউ শাক, পালই শাক বা ঢেঁকিয়া শাক হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। বৈজ্ঞানিক নাম: Diplazium esculentum)। এটি Athyriaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি।
আগের দিনে ভিটায়, ঝোঁপ-ঝাড়ে, বাড়ির আঙ্গিনায় হাত বাড়ালেই মিলত টেঁকি শাক। ময়মনসিংহের নান্দাইলে বিলুপ্তির পথে ভিটামিন ও আয়রন যুক্ত সবজী এই ঢেঁকি শাক। বিভিন্ন উৎসবে এই টেঁকি শাক পরিবেশন করা হতো। এখন নতুন প্রজন্মের অনেকেই ঢেঁকি শাক চিনেন না। নিত্য নতুন বাড়ি ঘর তৈরি হওয়াতে ভিটে, ঝোঁপ-ঝাড় না থাকায় টেঁকি শাক এখন বিরল। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে ঢেঁকি শাক প্রায় বিলিন হতে চলেছে। আমরা আবাদী জমি ও ভুমি বাড়াতে গিয়ে ঢেঁকি শাককে যেন চির তরে বিদায় করে না দেই।
এই শাকে প্রচুর ভিটামিন এ ও সি রয়েছে। এছাড়াও এ ঢেঁকি শাকে রয়েছে বিভিন্ন রোগের সমাধান। ঢেঁকি শাক খেলে দাঁতের ক্ষত বা ক্যাভিটি দূর হয়। চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ঢেঁকি শাক পটাসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আমাদের উচ্চ কিংবা নিন্ম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ফুসফুস ও ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এই শাকের। পুরোনো কাঁশি ও কাঁটা-ছেঁড়া কিংবা ঘা-ক্ষত সারিয়ে তোলে এই শাক। ঢেঁকি শাক আমাদের বিভিন্ন রকমের ব্যথা, লিভার ইনফেকশন এবং ঠাণ্ডা-কাঁশির জীবাণু ধ্বংস করে।
৭৫ উর্ধ বয়সের বৃদ্বা হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমাদের সময়ে প্রচুর পরিমানে ঢেঁকি শাক পাওয়া যেত। এখন তা আর দেখতে পাইনা।’
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, সরকারি উদ্যোগে বানিজ্যিকভাবে ঢেঁকি শাকের আবাদ করলে নতুন প্রজন্ম এই শাক সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারবে।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ