আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, শুধু বিএনপি-জামায়াত, রাজাকার ও আলবদর নয়। আন্তর্জাতিক চক্র যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেনি, বার বার এদেশে বিপর্যয় ঘটাতে চেয়েছে। তারাও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সারাক্ষণ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসব দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের উদাহরণ।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, এই কয়েকদিন আগের কথা, পদ্মাসেতুর দুর্নীতির নামে আমাদের গায়ে কালিমা লেপন করতে চেয়েছিল। সেই কালিমা লেপন তারা করতে পারেনি। সেই যুদ্ধেও আমরা বিজয়ী হয়েছি। অন্যায়ভাবে মিথ্যাচারের ভিত্তিতে কোন তথ্য ছাড়া, কোন প্রমান ছাড়া একটা রাজনৈতিক অশুভ লক্ষ্য নিয়ে আমাদের উপর এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং আমি অনুরোধ করবো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য।
‘সরকার বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তাজউদ্দীন আহমদের নাম উচ্চারণ করেনি’ বিএনপি’র মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মা’র চেয়ে মাসীর দরদ বেশি। দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরে বিএনপির কোন নেতাকর্মী এক সেকেন্ডের জন্য একবারের জন্যও কি তাজউদ্দীন আহমেদের নাম, জেনারেল এমএজি ওসমানীর নাম উচ্চারণ করেছে? করেনি। আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী যেকোন অনুষ্ঠানে প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেন, শ্রদ্ধা জানায়। তারপর জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করে অনুষ্ঠান ও বক্তব্য শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং করবেন।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে না। মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত ও ভুলুণ্ঠিত করেছে এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চাইছে। তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কথা শোভা পায় না।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের জন্য খুব গর্বের ও অহংকারের। এই দিনে আমরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের পরাজিত করে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করি। এই বছর আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি। এর সাথে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে। দলকে তারা আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু ও দলের আদর্শের প্রতি নেতাকর্মীর আনুগত্য, রাজনৈতিক দৃঢ়তা এবং অতীত কর্মকাণ্ড ভালভাবে যাচাই-বাছাই করে নতুন কমিটিতে স্থান দিতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকার প্রতিবছর দেশের ১ কোটি পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছে। দেশের গরিব, অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষেরা খাওয়ার জন্য যাতে কোন কষ্ট না পায়, সেজন্য ১ কোটি পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়া হচ্ছে। একই সাথে ওএমএস, টিআর, কাবিখার মাধ্যমে চাল দেয়া হচ্ছে। দেশে খাদ্য নিয়ে কোন হাহাকার নেই, কোন মানুষ না খেয়ে নেই।
সখীপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি ফজলুর রহমান খান ফারুক।
সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য এ.বি.এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আতাউল মাহমুদ, সখীপুর পৌরসভার মেয়র আবু হানিফ আজাদসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ