কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে গড়বিশুদিয়া পোড়াবাড়িয়া হয়ে চরকাটিহারী, চরহাজীপুর, হাজিপুর বাজার পর্যন্ত বন্যাকবলিত চরাঞ্চল রক্ষায় বেড়িবাঁধের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি ওই এলাকায় প্রবেশ করে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাই বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্করণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর আগে উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকার কৃষি ফসল রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বেড়িবাঁধটি নির্মাণ করা হয়। গত ৩ বছর আগে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ সংস্কার করা হলেও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক-লরি, টমটম, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ফলে প্রতিনিয়ত সড়কে কোন না কোন স্থানে ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে প্রাণহানির ঘটনাও।
সড়ক দিয়ে গর্ভবতী নারী শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াত এখন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমী এতদঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চরাঞ্চলের ওই গ্রামগুলোকে বন্যা কবল থেকে রক্ষা করার জন্য যে বেড়িবাঁধের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল তা ভেস্তে যাবে। কিন্তু রাস্তাটির সংস্করণে কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী, পথচারী ও যানবাহনের চালক।
উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চর কাটিহারী, চরহাজীপুর, চরহটর আলগী, হাজিপুর গ্রামে বিস্তৃর্ণ ফসলি মাঠে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, মুলা, গাজর, টমেটো, বেগুন, কাঁচা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, ধান সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। এসব অঞ্চলের উৎপাদিত শাকসবজি স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। ফলে এসব অঞ্চলের স্থানীয় কৃষকরা উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে উৎপাদিত ফসল ও শাকসবজি স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করতে না পারায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে কাঁচা শাকসবজি।
স্থানীয় চরহাজীপুর গ্রামের ফজলুল হক, চরকাটি হারী গ্রামের আলমসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধ সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ও খানাখন্দে ভরা থাকলেও কর্তৃপক্ষের কেন যেন উদাসীন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জিনারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, এ বেড়িবাঁধটি সংস্কারের জন্য এলজিডি বরাবর লিখিত দিলেও তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অজুহাত দেখিয়ে গড়িমসি করছে। তবে দ্রুততার সঙ্গে সংস্করণ করা না হলে অত্র এলাকায় ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী গালিব মোর্শেদ জানান, সরেজমিনে পরিদর্শন করে এসেছি। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্করণের জন্য জনপ্রকৌশল মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। ফলে দ্রুততার সহিত সংস্করণের কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ