ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অবশেষে অটোরিকশা চালক হত্যার রহস্য উদঘাটন

প্রকাশনার সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:১৯

এক লাখ টাকার বিনিময়ে অটোরিকশা চালক শরিফুল ইসলামকে জবাই করে হত্যা করে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমত ওরফে তারেক। হত্যাকান্ডের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই এর রহস্য উদঘাটন করে লিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে দায় স্বীকার করে দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার আসামিরা হলেন, নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার হিজুলিয়া গ্রামের আ. রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫), শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে অফ্রিদি (১৯), জেলার জয়দেবপুর থানা এলাকার বাউপাড়া গ্রামের নিয়ত আলীর ছেলে রাকিব হোসেন (২২), জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা এলাকার দর্জিপাড়া গ্রামের হাসানের ছেলে, ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া রাজিব শেখ (২২), ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার মিছিটেঙ্গী গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে, গাজীপুর মহানগরের সদর থানার শিকদার বাড়ি ভিমবাজার এলাকার জুয়েল রানা (২৭) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শাজাহ উদ্দিনের ছেলে হানিফ (২৭)।

পুলিশ সুপার জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া গ্রামের মৃত নায়েব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (২০) ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত ৯ ডিসেম্বর সকালে শরিফুল অটোরিকশা নিয়ে ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। ওইদিন বিকেলে বনখড়িয়া এলাকার রাস্তার পাশে অটোরিকশাটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে অটোরিকশার পেছনে থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিষয়টি অটোরিকশার মালিক মো. মোশারফ হোসেনকে জানান স্থানীয় এক ব্যক্তি। বিষয়টি মোশারফ হোসেন অটোচালক শরিফুলের বড় ভাই মো. সেকান্দারকে জানান। ওই দিন রাতে শরিফুল বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ের পরদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অটোরিকশা উদ্ধারের জায়গা থেকে সামান্য দূরে গজারি বনের ভেতর থেকে তার (শরিফুলের) গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। নিহতের স্বজনরা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। ওই দিনই নিহতের বড়ভাই মো. সেকান্দার বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর শ্রীপুর থানা পুলিশ, পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরো জানান, ভিকটিম শরিফুল ঘটনার ১০ থেকে ১২ দিন আগে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার ভাওয়াল মির্জাপুর গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের মেয়ে কারিমাকে (১৮) পরিবারের মতামত ছাড়াই গোপনে বিয়ে করেন। গত ১০ ডিসেম্বর কারিমাকে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে শরিফুলের বাড়িতে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারিমার বড় ভাই খোরশেদ আলমের শ্যালক রাজিব শেখ (২২) কারিমাকে পছন্দ করতেন। এ ছাড়া কারিমার বড় দুই বোনের স্বামী রাকিব হোসেন ও জুয়েল রানাসহ পরিবারের সদস্যরা কারিমার বিয়েতে রাজি না থাকায় তারা নিহত শরিফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছমত ওরফে তারেকের সাথে যোগাযোগ করে ভিকটিমকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তি করে। চুক্তি মোতাবেক নিহত শরিফুলকে সিগারেট খাওয়ানোর কথা বলে আছমতসহ সহযোগী অন্যরা বনখড়িয়া বাজার সংলগ্ন রাস্তার মাঝামাঝি গজারী বনের ভেতর নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ভিকটিমসহ সকলে সিগারেট ও গাঁজা সেবন করার এক পর্যায়ে শরিফুলকে চেপে ধরে মাটিতে ফেলে গলায় ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ