ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লণ্ঠনের রাজশাহী এখন আলো ঝলমল রুপপুরী

প্রকাশনার সময়: ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৫৬

খিনাঙ্গী পদ্মার কটিতে যখন লাল সূর্য ডুবন্ত, তখন ডাক হরকরার মতো ছুটতে ছুটতে আসতেন মিউনিসিপ্যালিটির কর্মচারী হাড়ুকাকা। মইয়ের সিঁড়ি বেয়ে কাঁপাকাপা হাতে পোলের চাঁদিতে উঠে ঝুলিয়ে যেতেন টিমটিমে আলোর কেরোসিন লণ্ঠন। সেই আলোর নিচে বসতেন প্রাচীন– দাদুরা। মাঝখানে খেলার জন্য থাকতো কারো বিনতি কারো পাসা। পাশে থাকতো গুটি কয়েক উৎসাহী দর্শক। কখনো পূর্নিমা চাঁদ বাড়তি আলো হিসেবে জোৎস্নার রূপ ঢেলে দিতো। শরৎচন্দ্রের উপন্যাস ‘আধারে রূপ’-এর মতো সেদিনের সেই আলো-আঁধারি রাজশাহী এখন আলো ঝলমল রূপপুরী।

বুধবার নয়া শতাব্দীর সঙ্গে আলাপকালে বর্তমানে আলোর নগরী রাজশাহীর অতীত ইতিহাস বলছিলেন নগরীর সাগরপাড়ার বাসিন্দা প্রবীণ সাংবাদিক, কবি ও ছড়াকার এমএ কাইউম। সেসময়কার রাজশাহী মিউনিসিপ্যালিটি এখন সিটি কর্পোরেশন। আধুনিকতা ও উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে রাজশাহী নগরীর চেহারা। প্রশস্ত সড়ক, মোড়ে মোড়ে আধুনিক লাইটিং ব্যবস্থা ও দৃশ্যমান প্রজাপতির ডানার মতো সড়কবাতির আলোতে রাতে আলো ঝলমল রূপের নগরীতে পরিণত হয়েছে রাজশাহী।

সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, দেশে সর্বপ্রথম রাজশাহী মহানগরীর পশ্চিমের প্রবেশ পথ কাশিয়াডাঙ্গা মোড় থেকে বিলসিমলা রেল ক্রসিং পর্যন্ত চার দশমিক দুই কিলোমিটার সড়কটিতে ১৭৪টি দৃষ্টিনন্দন বৈদ্যুতিক পোল স্থাপন করা হয়। ১৭৪ টি বৈদ্যুতিক পোলে রয়েছে ৩৪৮টি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন এলইডি বাল্বের সড়কবাতি। বাতিগুলো প্রজাপতির ডানার ন্যায় মেলে ধরেছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এ বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হয়। কাজটি সম্পন্ন করতে ব্যয় ধরা হয় পাঁচ কোটি ২২ লাখ টাকা। এরপর দৃষ্টি নন্দন এই সড়ক বাতিগুলো নগরীর বিভিন্ন সড়কে স্থাপন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ উপশহর মোড় থেকে দড়িখরবোনা, কাদিরগঞ্জ, মহিলা কলেজ, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে সোনাদিঘী মোড় এবং মালোপাড়া মোড় থেকে রানীবাজার মোড় পর্যন্ত সড়কে মোট ৯৬টি ডেকোরেটিভ পোলে ৯৬টি দৃষ্টিনন্দন এলইডি সড়কবাতি লাগানো হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

গত রোববার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর রানীবাজার মোড়ে সুইচ টিপে নান্দনিক সড়ক আলোকায়নের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধনের পর সড়কটির আলোকায়ন ঘুরে দেখেন সিটি মেয়র। দৃষ্টিনন্দন এ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হবে।

উদ্বোধনকালে রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে শুধুমাত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে আমরাই মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পর্যায়ক্রমে উন্নতমানে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়কবাতি স্থাপন করছি। এরই ধারাবাহিকতায় দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতির উদ্বোধন করা হলো। আগামীতেও অন্যান্য সড়কে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়কবাতি লাগানো হবে। আমরা সবাই মিলে রাজশাহীকে সৌন্দর্যমন্ডিত ও উন্নত মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ