বগুড়ার শেরপুরে সুদে টাকা লাগাতে নিষেধ করায় ধারালো বটি দিয়ে ঘুমন্ত স্বামীর গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে স্ত্রী লাকী আক্তার।
এসময় তার গোঙানির শব্দে পরিবারের সদস্যরা এসে উদ্ধার করেন গুরুতর আহত স্বামী তজমল হোসেনকে (৩৫)। শ্বাসনালী অক্ষত থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় এখনও শঙ্কামুক্ত নন তিনি। পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের ঝাঁজর বিলনোথার গ্রামে ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ঘটনায় শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, প্রায় পনের বছর আগে ঝাঁজর বিলনোথার গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে তজমল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় লাকী আক্তারের। ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। সংসারে তাদের কোনো সন্তান নেই। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন স্বামী তজমল হোসেন। সংসারের খরচ বাদে বাড়তি কিছু টাকা সঞ্চয়ও করেন তারা। কিন্তু সঞ্চয়ের এসব টাকা স্বামীকে না জানিয়ে গোপনে সুদে টাকা লাগান স্ত্রী লাকী আক্তার।
এভাবে সামান্য সময়ের মধ্যেই লক্ষাধিক টাকার মালিক বনে যান তিনি। একপর্যায়ে বিষয়টি স্বামী জানতে পেরে সুদে টাকা লাগাতে নিষেধ করেন তাকে। এনিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে রোববার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জেরে সোমবার সকালে ধারালো বটি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্বামী তজমল হোসেনের গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায় স্ত্রী লাকী আক্তার।
পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তজমল হোসেন বলেন, সংসারে তার উপার্জিত টাকার হিসাব ও সুদের ওপর টাকা লাগাতে বন্ধ করা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এছাড়া তেমন কিছুই হয়নি। অথচ এই সামান্য বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী তাকে ঘুমের মধ্যে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। যা কল্পনাও করতে পারছি না। তাই থানা-পুলিশের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে অভিযুক্ত স্ত্রী লাকী আক্তার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ঘুমন্ত স্বামীর গলায় ছুরি চালানোর মতো কোনো ঘটনা তিনি ঘটাননি। ওইদিন তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগ-বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে শক্ত ধারালো কোনো কিছু দ্বারা তার স্বামীর গলা কেটে রক্ত বের হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়েই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেইসঙ্গে আহতের খোঁজখবর নেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে স্ত্রী দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ