পাল্টে গেল টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপট। এতোদিন পর্যন্ত নৌকার প্রার্থী মেয়র হাজী ইসলামকে বেসরকারী ভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা করা হলেও ঘুরে ফিরে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মোঃ ইসমাইল। ফলে এবারের নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
উচ্চ আদালতে মনোনয়নের বৈধতা চেয়ে রিটে তার প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করায় ইসমাইলের নির্বাচন করতে কোনো বাঁধা রইলনা বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুর রহমান।
১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
নির্বাচন অফিসের সূত্র অনুযায়ী, আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের টেকনাফ পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করে ২৫ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। মেয়র পদের নৌকার প্রার্থী ছিলেন হাজী ইসলাম, তার ভাতিজা আব্দুস শুকুর, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ ইসমাইল ও মোঃ শাহজাহান।
২৯ নভেম্বর মনোনয়ন যাচাই বাচাইকালে উপজেলা রিটার্নিং অফিসার বেদারুল ইসলাম আব্দুস শুকুর ও ইসমাইলের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। ইসমাইলের মনোনয়নের সাথে এসএসসির মূল সনদ সংযুক্তি না করার কারণে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুস শুকুর তার চাচা মেয়র ইসলামের সাথে পারিবারিকভাবে সমঝোতায় আসলেও অপর প্রার্থী মোঃ ইসমাইল ৫ ডিসেম্বর প্রার্থীতা ফেরত চেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর এসএসসির মার্কশিট সংযুক্তি করে আবেদন করলে তিনি তা খারিজ করে দেন। যদিও বিগত ২০১১ ও ২০১৬ সালে তিনি একইভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রার্থীতা ফেরত চেয়ে ইসমাইল হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। যার (রিট পিটিশন নং- ১২২৮৬/২০১২)। রিটের শুনানি শেষে ১২ ডিসেম্বর ইসমাইলের প্রার্থীতা বৈধ এবং নির্বাচন করতে বাঁধা নেই ঘোষণা করে রায় দেয় উচ্চ আদালত।
মোঃ ইসমাইলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুর রহমান জানান, একটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নাগরিক অধিকার রয়েছে। ক্ষমতার প্রতাপে স্থানীয় আমলাদের বশ করা গেলেও আদালতের কাছে সবাই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে সেটা আবার প্রমাণিত হলো। এই রায়ের মাধ্যমে মেয়র পদে মোঃ ইসমাইলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আর বাঁধা রইলোনা।
মেয়র প্রার্থী ইসমাইল বলেন, পৌরবাসীর সমর্থন ও ভালোবাসায় আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। একটি বিশেষ মহল ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছিল। অবশেষে আদালতের মাধ্যমে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমার প্রতীক মোবাইল ফোন। পৌরবাসী আগামী ২৬ তারিখ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে বলে আমি আশাবাদী।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, একটি অ্যাডভোকেসি কপি নন অফিসিয়ালী পেয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করার পরে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। দুই এক দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতের রায়ের কপি হাতে এলেই বিধি মোতাবেক দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ