১৯৭১ সালের এই দিনে (১৩ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা ও তার আশে পাশের এলাকা হানাদার মুক্ত হয়।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১১ নভেম্বর উপজেলার নওগাঁ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগঠন পলাশ ডাঙ্গা যুবশিবিরের নেতৃত্বে পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তাড়াশ উপজেলাকে হানাদার মুক্ত করার লক্ষে ঐতিহাসিক নওগাঁ বাজার এলাকায় পলাশডাঙ্গা যুবশিবির নামে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আবদুল লতিফ মির্জা।
সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর ও বগুড়া অঞ্চলের প্রায় ৬৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ মির্জার নেতৃত্বে ‘পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির’ সংগঠনে যোগ দেন। পরে তাড়াশকে হানাদার মুক্ত করার জন্য ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ওই সংগঠনের ৬৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্থানি সেনাদের সঙ্গে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সম্মুযুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধ চলাকালীন ১৫০ জন পাক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। আর দুজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। যুদ্ধ শেষে পাক হানাদার বাহীনির ক্যাপ্টেন সেলিমসহ ৯ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা তাড়াশ এলাকা হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে স্বাধীনতার উৎসবে মেতে ওঠেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১৫০ জন সৈন্য মারা যায়। তৎকালীন পলাশ ডাংঙ্গা যুবশিবিরের সর্বাধিনায়ক গাজী আমজাদ হোসেন মিলন, গাজী আব্দুর রহমান, গাজী সাইদুর রহমান, গাজী আরশেদ আলী, গাজী আব্দুল কুদ্দুস, গাজী নাজেম উদ্দিনসহ অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওই যুদ্ধে অংশ নেন।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার গাজী আরশেদ আলী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর নওগাঁ পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। পরে ১৩ই ডিসেম্বর প্রথম তাড়াশ উপজেলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া অনেক প্রচেষ্টায় ঐতিহাসিক নওগাঁ বাজার এলাকায় যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ওই স্থানে নির্মিত হয়েছে নওগাঁ যুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন। যা স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যকে বুকে ধারণ করে স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ