আজ ১৩ ডিসেম্বর। নাটোরের লালপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে লালপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় লালপুর শহীদ মিনার চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা পরিচিতি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান ও আলোচনা সভার আয়োজন করে লালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল।
লালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রউফ জানান, লালপুরের ময়না গ্রামে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিকামী মানুষের উত্তরাঞ্চলের প্রথম সম্মুখযুদ্ধ হয়।
লালপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৩০ মার্চ ময়না গ্রামের সম্মুখযুদ্ধে মুক্তিসেনারা হানাদারদের ২৫ নম্বর রেজিমেন্ট ধ্বংস করে দেয়। সেদিন প্রায় ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৩২ জন আহত হন। ১২ এপ্রিল ধানাইদহ ব্রিজের কাছে প্রতিরোধ যুদ্ধে ১০/১২ জন শহীদ হন।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল দুয়ারিয়া ইউপির রামকান্তপুর গ্রামে পাকবাহিনী ১৮ জনকে হত্যা করে। ৫ মে পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকার নর্থ বেঙ্গল চিনিকল এলাকা ঘেরাও করে মিলের প্রশাসক লে. (অব.) আনোয়ারুল আজীমসহ কর্মরত প্রায় ২শ’ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে চিনিকল এলাকার পুকুর পাড়ে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
২৯ মে পাক সেনাদের একটি দল চংধুপইলের পয়তারপাড়া গ্রামে নদীর পাড়ে ৫০ জনেরও অধিক নিরীহ লোককে গুলি করে হত্যা করে। ২৫ জুলাই ২২ জনকে লালপুর নীলকুঠিতে হত্যা এবং ২৬ জুলাই একই স্থানে চারজনকে জীবন্ত কবর দেয়।
২০ জুলাই রামকৃষ্ণপুর গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও পাঁচজনকে হত্যা করে। ৩০ জুলাই বিলমাড়িয়া হাট ঘেরাও করে বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে ৫০ জনেরও অধিক লোককে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ ১৩ ডিসেম্বর পাকসেনারা ঝটিকা আক্রমণ করে মহেশপুর গ্রামে ৩৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ