১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাপিয়ে পড়লে জনযুদ্ধের আদলে একটি গেরিলাযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ দেশকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর কব্জা থেকে মুক্ত করতে কয়েক মাসের মধ্যে গড়ে তোলেন মুক্তিবাহিনী। গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী সারাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। ধীরে ধীরে হানাদার বাহিনীকে বাংলাদেশ থেকে মুক্ত করতে থাকে। ১৩ ডিসেম্বর ধামরাইয়ে পাক হানাদার বাহিনীদের মুক্ত করতে সক্ষম হয়। ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান ৯৩,০০০ হাজার সৈন্যসহ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙ্গালী জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
আজ ১৩ ডিসেম্বরের এই দিনে ঢাকার ধামরাইয়ে পাক হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১সালের ১৩ ডিসেম্বর স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মো: আবুল হোসেন, মো: মেছের আলী ও ওয়াহেদ আলী নামের তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রাণের বিনিময়ে ধামরাই জনপদ শত্রুমুক্ত হয়।
ধামরাই উপজেলা কুশুরা ইউনিয়নের পানকান্তা, যাদবপুর ইউনিয়নের আমছিমুর ও বালিয়া ইউনিয়নে যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদের নেতৃত্বে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে ৬ পাক বাহিনী ও তিন মুক্তিযুদ্ধা নিহত হয়। তিন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধকালীন সময়ের সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা মো: সাখাওয়াত হোসেন সাকু বলেন, সেদিনের দিনটি ছিল অনেক ভয়াবহ ও বিভীষিকাময়। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব বেনজীর আহমদের নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের বাজি রেখে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেই মাতৃভুমি রক্ষা করতে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমেদ এর সঠিক নেতৃত্বের কারণেই ১৯৭১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর পাকবাহিনীর থেকে ধামরাইয়ের মাটি মুক্ত করতে সক্ষম হই। এ যুদ্ধে খড়ারচর গ্রামের মো: আবুল হোসেন, বইন্যা গ্রামের মো: মেছের আলী ও বিলভাউটিয়া গ্রামের মো: ওয়াহেদ আলী শহীদ হন। তাদের জীবনের বিনিময়ে ধামরাই উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। এ যুদ্ধে ৬ পাক সেনা নিহত হয় ও তিনজন আত্মসমর্পণ করে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ