পুলিশের প্রতিবেদনে স্থায়ী ঠিকানাবিহীন ও ভূমিহীন আছপিয়া ইসলাম কাজল কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাবেন কিনা তা নিশ্চিত না হলেও তার পরিবারের নিজস্ব জমির সন্ধান মিলেছে। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হালিমাবাদ গ্রামে। সাড়ে ১০ শতাংশ জমির মালিক সেই আছপিয়া ইসলামের পরিবার। এমনটিই নিশ্চিত করেছেন তার চাচা মোশারেফ হোসেন মাতাব্বর।
তবে আছপিয়াদের পরিবার দীর্ঘদিন থেকে বরিশালের হিজলায় বসবাস করায় ওই সম্পত্তির কোন খোঁজ নেয়নি তারা। তার দাদার বাড়িতে ৮৪ শতাংশ জমির মধ্যে আছপিয়ার পরিবার সাড়ে ১০ শতাংশ পৈত্রিক সূত্রে মালিক।
আছপিয়ার চাচা মোশারেফ জানান, তার বাবা মৃত মকবুল হোসেন মাতাব্বরের চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ৮৪ শতাংশ জমির মালিক। তার ৬ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে রয়েছে। তারা হলেন, আমির হোসেন,হেলাল উদ্দিন, মোশারেফ হোসেন, শফিকুল ইমলাম, অহিদ উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, মসিনা খাতুন ও মমতাজ বেগম।
এরমধ্যে আছপিয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম দুই বছর আগে মারা যান। তিনি ছিলেন ছেলেদের মধ্যে চতুর্থ সন্তান। এছাড়া আরেক ভাই নিজাম উদ্দিন ও বোন মসিনা খাতুনও মারা যায়। বর্তমানে ওই পরিবারে জীবিত আছেন ৪ ছেলে ও এক মেয়ে। সেই হিসেবে ৮৪ শতাংশ জমির মধ্য আছপিয়ার পরিবার পৈত্রিক সুত্রে সাড়ে ১০ শতাংশ জমির মালিক।
মোশারেফ আরও জানান, ২৫ বছর আগে আছপিয়ার বাবা শফিকুল ইমলাম তার বড় ভাইর সাথে হিজলা চলে যান। সেখানেই তিনি বিয়ে করেন এবং বসবাস শুরু করেন। তারা তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে খুব প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা আসতেন না। তবে তাদের সম্পত্তি এখনো আছে। যার মালিক আছপিয়ার পরিবার।
উল্লেখ্য,পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে বরিশাল জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ সদর দফতর। ঐ বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল জেলা থেকে টিআরসি পদে ৭ জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হিজলা থেকে অনলাইনে আবেদন করেন আছপিয়া ইসলাম। ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও কৃতকার্য হন।
এর পর ২৪ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আছপিয়া। ২৬ নভেম্বর পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে কৃতকার্য হন আছপিয়া। তবে চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নিয়োগ থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। কারণ তিনি বরিশাল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। এই নিয়োগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ