ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শুনে শুনে মুখস্থ, এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে দৃষ্টিহীন চয়ন 

প্রকাশনার সময়: ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০৮
সংগৃহীত ছবি

সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চয়ন তালুকদার এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। বোনের মুখ থেকে শুনে শুনে পড়া মুখস্থ করে শ্রুতলেখকের সহায়তায় তিনি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। চয়ন তালুকদার জগন্নাথপুর পৌরসভার ভবানীপুরের নিতাই তালুকদারের ছেলে। জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী তিনি।

বৃহস্পতিবার স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অন্যের সহযোগিতায় লিখে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রথম দিনের পরীক্ষায় অংশ নেয়। চয়ন জানায়, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। জন্মগতভাবে দু’চোখ অন্ধ থাকায় পড়ালেখা নিয়ে অনিশ্চিতা দেখা দেয়। তবে তার সমবয়সী ছোট বোন মৌসুমী তালুকদার যখন পড়ার টেবিলে বসে পড়ত তখন তার পাশে বসে শুনে শুনে সে পড়া মুখস্থ করে ফেলত। পরে সে ওই পড়া বলত অন্যজন লিখে দিত। লেখা পড়ার প্রচণ্ড আগ্রহ দেখে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার বাবা তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেন। ২০১৯ সালে আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় শ্রুতি লেখন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাকে শ্রুতি লেখনে সহায়তা করেন বন্ধু মাজহারুল ইসলাম। মাজারুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষার সময়ও শ্রুতি লেখনের দায়িত্ব পালন করেন।

চয়নের বাবা নিতাই তালুকদার জানান , জন্মগতবাবে আমার ছেলের দু’চোখে আলো নেই। তবে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ছিল। ভাইবোন মিলে একসঙ্গে পড়ালেখা করে এবার দুজন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। অভাব অনটনের কারণে ঠিকমতো তাদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারছি না।

চয়নের শ্রুতি লেখন মাজহারুল ইসলাম বলেন, চয়ন লেখাপড়ায় খুবই ভাল। চয়ন বলে দেয়, আমি শুধু খাতায় লিখে দেই। এতে আমাদের কোন অসুবিধা হয় না বলে জানায়।

জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম বলেন, চয়নকে শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখনের অনুমতি এনে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। আমরা তার সফলতা কামনা করছি।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ