উৎকোচ না দেয়ায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সামনে (বুধবার ৮ নভেম্বর) একই অফিসের এক নারী অফিস সহায়ক (পিয়ন) জমেলা বেগমের হাতে লাঞ্ছিত ও আশোভন আচরণের শিকার হয়েছেন বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাহান আলী।
এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫ নং বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান আলী তাঁর কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। এ সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসের বিতর্কিত নারী অফিস সহায়ক (পিয়ন) জমেলা বেগম তাঁর হাত থেকে মনোনয়ন পত্র নিয়ে দুই হাজার টাকা দাবি করে।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জানাতে গেলে জমেলা বেগম সেখানে প্রবেশ করে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের ধাক্কা দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস সালামের সামনেই পিয়ন জমেলা বেগম জুতা খুলে মারতে আসে এবং অশোভন আচরণ করেন।
ঘটনার সময় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ভিডিওটি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাহান আলী বলেন, ‘গত ৫ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র তোলার দিন পিয়ন জবেদা বেগম আমার কাছে উৎকোচ দাবি করে। আমি তাকে বুঝিয়ে মনোনয়নপত্র তুলে নিয়ে আসি। আজ মনোনয়ন জমা দিতে গেলে পূনরায় সে দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে নির্বাচন অফিসারের সামনেই আমাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন।’
এ বিষয়ে নারী অফিস সহায়ক জমেলা বেগম জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে আসা লোকজন আমার পিঠে হাত দিয়েছিল। আমি সেটার প্রতিবাদ করেছি মাত্র।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘একজন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তাঁর কর্মী সমর্থকের সাথে একজন নারী অফিস সহায়ক যে অশোভন আচরণ করেছেন তা কাম্য নয়। আমি নিজেই হতবাক হয়েছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজন জানান, নির্বাচন অফিসের পিয়ন জমেলা বেগমের এমন আচরণ নতুন নয়। নিজেকে জনৈক সচিবের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে থাকেন। ইতিপূর্বে তাঁর অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় তিনি নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ এবং নিজ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেয়াসহ নানা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছেন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ