ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘুমের মধ্যে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা 

প্রকাশনার সময়: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:১৬

ঘুমের মধ্যে সৌদি প্রবাসী হোসেন হাওলাদারের স্ত্রী আখি (৩১) কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর রাতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নশাসন ডগ্রী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, স্বামী বহু বছর সৌদি প্রবাসে। মেয়ে স্নেহা (১২), জিন্তু (৫) ও ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা শ্বাশুরিকে নিয়ে ছিল আখির পরিবার। বড় মেয়েকে ডাক্তার ও ছোট মেয়েকে প্রকৌশলী বানানোর স্বপ্ন দেখতেন আখি। সেই লক্ষ্যেই তিনি মেয়েদের প্রতি যত্নবান ছিলেন। বুধবার ভোর না হতেই আখির জীবন ফুড়িয়ে গেল দুর্বৃত্তের হাতে। একই সাথে হত্যা হয়ে গেল সন্তানদের স্বপ্ন।

কি হয়েছিল আখির সাথে জানার জন্য কথা বললে নিহতের শ্বাশুরি নুরজাহান বেগম, বোন মিতু, জা মিনা আক্তার জানান, পারিবারিকভাবে আখির কোন শত্রু ছিল না। ব্যক্তিগত কোন শত্রু আছে কি না তাও কারো জানা ছিল না। আখি তার দুই সন্তান ও শ্বাশুরিকে নিয়ে নিজ বসত ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর ৬টার দিকে শ্বাশুরি নুরজাহান বেগম ওযু করার জন্য ঘরের বাইরে যায়। যাওয়ার সময় ঘরের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে রাখে। পরে বাহির থেকে কান্না ও চিৎকারের শব্দ শুনে শ্বাশুরি নুরজাহান ঘরে গিয়ে দেখে আখির মেয়েরা তাদের মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। পরবর্তীতে বাড়ির অন্যান্য সদস্যগণ ও প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকে আখিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। তখনও আখির নিথর দেহটি গরম ও নরম ছিল। প্রাথমিকভাবে আখির মাথায় একটি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় তারা। আখির সাথে কি হয়েছিল উপস্থিত কেউ বলতে পারেনি।

নিহত আখির বড় মেয়ে স্নেহা জানায়, তাদের বাবা প্রবাসে থাকলেও মা তা বুঝতে দেয়নি। বাবা-মায়ের দায়িত্ব একাই পালন করতেন তাদের মা। স্নেহা বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্যে মা বলতেন, ভালোভাবে লেখাপড়া করতে হবে। নাহলে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যাবে না। আমাদের বেশি টাকা নাই যে তোমাদের জন্য চাকু কিনে আনব। তোমরাই আমাদের স্বপ্ন। তোমাদের লেখাপড়া করে ভালো মানুষ হতে হবে। মানুষের উপকারে আসতে হবে।’

নিহতের সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশ উপপরিদর্শক জালাল বলেন, ‘শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নশাসন ডগ্রী এলাকায় সৌদি প্রবাসী হোসেন হাওলাদারের স্ত্রী আখি (৩১) কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৬টার দিকে ডগ্রী বাজারের নিজ বাড়ির বসত ঘরে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরে ঘরে অসংখ্য মানুষের প্রবেশ হয়েছে। ফলে আলামত অনেকটা নষ্ট হয়েছে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে মরদেহ উদ্ধার পরবর্তী সুরত হাল প্রতিবেদন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ