সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দেশি মাছের শুটকির বিশাল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। লাভ ভালো হওয়ায় দিন দিন শুটকির উৎপাদন বাড়ছে। স্থানীয় এসব শুটকি দেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
ইতোমধ্যে চলনবিলের তাড়াশে এ শুটকির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে লাভবান হচ্ছেন শুটকি ব্যবসায়ীরা। এবছর সাড়ে তিন হাজার মণ শুটকি উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে মৌসুম শুরু হওয়ায় ২ মাস আগে থেকে কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে শুটকি ব্যবসায়ীর সঙ্গে জড়িত শতাধিক নারী পুরুষের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাড়াশ উপজেলার মহিশলুটিতে গড়ে উঠেছে দেশি পুঁটি মাছের শুটকি পল্লী। প্রতিদিন বিভিন্ন বিল-খাল থেকে দেশি পুঁটি এনে রোদে মাচা বা চাতালে শুকানো হচ্ছে। এখানে কাজ করছে এলাকার নারী-পুরুষ মিলে। ভালো মূল্যে এসব মাছ জেলার বাইরে রফতানি হচ্ছে। শুটকির খরচ কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় প্রতি বছর এ ব্যবসার পরিধি বাড়ছে বলে জানান এখানকার ব্যাবসায়ীরা।
জানা গেছে, উপজেলার মহিশলুটি এলাকায় গড়ে উঠে এ শুটকি পল্লী। প্রথমে হাট-বাজার থেকে মাছ কিনে এনে খালের পানিতে ধুয়ে বাঁশের মাচা করা চাতালে এক সপ্তাহ থেকে পনের দিন শুকাতে হয়। তারপর বস্তাবন্দি করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। বাংলা কার্তিক মাস থেকে শুরু করে সাড়ে চার মাস এ ব্যবসা চলে।
উপজেলার মহিষলুটি এলাকার শুটকি ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, চলনবিলে দেশীয় প্রজাতির মাছের শুটকি তৈরির অসংখ্য চাতাল গড়ে ওঠে বর্ষা মৌসুমে। টেংরা, পুঁটি, খলসে, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, গুচি, চিংড়ি, চাঁন্দা, বোয়াল, শৈল মাছসহ ছোট বড় অসংখ্য মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির সু-স্বাদু মাছ শুকিয়ে শুটকি তৈরি করা হয়।
ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, এখানকার তৈরি শুটকি সৈয়দপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এমনকি বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও পাঠানো হয়। প্রকারভেদে ৩০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, প্রতিবছর তাড়াশে বিল, খাল ও বিভিন্ন নদী থেকে অনেক দেশীয় প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। বর্তমানে উপজেলার মহিশলুটি জায়গায় এসকল মাছ শুকানো হচ্ছে। আর এ মাছের চাহিদা দেশের বিভিন্ন বাজারে রফতানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের এখানের শুটকির সুনাম অর্জিত হয়েছে। আমরা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে শুটকি পল্লির জেলেদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ