ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাগুরায় পালিত হচ্ছে মুক্ত দিবস

প্রকাশনার সময়: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:১৮

আজ ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার মুক্ত হয় মাগুরা। পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তৎকালীন মাগুরা মহাকুমায় ব্যাপক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

মরহুম এডভোকেট আছাদ্জ্জুামন ও তৎকালীন মহাকুমা প্রশাসক ওলিউল ইসলামের নেতৃত্বে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে জেলায় সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।

মাগুরাকে শত্রু মুক্ত করতে শ্রীপুরের আকবর হোসেন মিয়ার নেতৃত্বাধীন শ্রীপুর বাহিনী, মহম্মদপুরের ইয়াকুব বাহিনী, মহম্মদপুর-ফরিদপুর অঞ্চলের মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কমল বাহিনী, মাগুরা শহরের খন্দকার মাজেদ বাহিনী এবং লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বে মুজিব বাহিনীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক সাহসী ভূমিকা নিয়ে পাক সেনা ও স্থানীয় রাজাকার আল বদর বাহিনীর সঙ্গে প্রাণপণ যুদ্ধ করে। গেরিলা বাহিনীর ব্যাপক আক্রমনের মুখে পাক বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনী নিজনান্দুয়ালী গ্রামসহ বিভিন্ন পাকিস্তানী ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। একই সঙ্গে মিত্রবাহিনীর আগ্রাসনের ভয়ে পাকিস্তানী সেনারা রাতারাতি মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

৭ ডিসেম্বর মাগুরা শত্রুমুক্তির আনন্দে মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামে সারা শহরে। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মাগুরা। যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যমত সংগঠক ভারতের রানাঘাট যুব ক্যাম্পের ইনচার্জ এমপি আছাদুজ্জামান মাগুরার মুক্তি বাহিনীকে দিক নির্দেশনা, যুদ্ধাস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করতেন। ৭ ডিসেম্বর বিকেলে সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আছাদুজ্জামান মিত্রবাহিনীর দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাপতি মেজর চক্রবর্তীর সঙ্গে সাজোয়া যানে মাগুরায় প্রবেশ করেন মাগুরা নোমানী ময়দানে মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত কুচকাওয়াজে আছাদুজ্জামান অংশগ্রহণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মাগুরাকে পাকহানাদার মুক্ত বলে ঘোষণা করেন।

মাগুরা মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে মাগুরা জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন উপলক্ষে জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়াম, সরকারি, আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও বেসরকারি সকল ভবনে আলোকসজ্জাকরণ, সকালে নোমানী ময়দানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পতাকা উত্তোলন, আছাদুজ্জামান মিলনায়তনে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ আলোচনা সভা, বিকেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে মাগুরা জেলা শত্রুমুক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপট ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপির ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগদান ও সন্ধ্যায় শহরের চৌরঙ্গী মোড়, ভায়না মোড়সহ প্রধান প্রধান সড়কে ব্লাক আউট ও মোমবাতি প্রজ্বলনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাগুরা মুক্ত দিবস পালিত হবে।

নয়া শতাব্দী/এস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ