ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারতে ওমিক্রন : বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশনার সময়: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৪

বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে ওমিক্রন ভাইরাস নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে বিভিন্ন সতর্কতা জারি করা হলেও দেশের একমাত্র চতুদেশীয় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে নেওয়া হয়নি তেমন বাড়তি সর্তকর্তা।

ফলে নামে মাত্র ইমিগ্রেশন যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপা হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আসা চালকরা। এতে দিন দিন এ বন্দরের বাড়ছে ওমিক্রনের ঝুঁকি৷

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সরেজমিনে দেখা যায় এমন চিত্র, বন্দর এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করে যে যার ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এদিকে করোনার নতুন ধরণ অমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে বাড়তি সড়র্কতা জারি করা হলেও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি৷

ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আসা বিদেশি চালক, যাত্রী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কর্মচারী কেউই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। যে যার মতো করে ঘুরে বেড়ালেও গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরে অমিক্রন ভাইরাস নিয়ে কর্তৃপক্ষের নেই তেমন নজর দারি।

ইমিগ্রেশন যাত্রীদের কালের ভাদ্রে নামে মাত্র তাপমাত্রা মাপা হলেও ভারত তিন দেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসা বিদেশি চালকদের মাপা হচ্ছে না তাপমাত্রা, ট্রাকে করা হচ্ছে না জীবানুনাষক স্প্রে, এমনকি মাস্কও পরিধান করছে না কেউই।

যেখানে সব স্থলবন্দরে সতকর্তা অবলম্বন করেছে সেখানে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় স্বাস্থ্য বিধিকে উড়িয়ে দিয়েই চলছে আমদানি রফতানি কার্যক্রম। চার দেশের পণ্য আনা নেওয়ায় (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান) পণ্যবাহী ট্রাকের চালক হেলপারদের মাস্ক ছাড়া অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরে তেমন নজর দারি না থাকায় আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয়রা। যে কোনো সময় করোনার নতুন এ ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশংকার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

তবে ইতিপূর্বে করোনাকালীন সময়ে শর্ত সাপেক্ষে কঠোর স্বাস্থ্য বিধির এসোপির মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলেও এখন তা ভেস্তে গেছে। বন্দরে কারো মাঝে করোনার ভয় নেই বল্লেই চলে। তাই বন্দরে করোনা নিয়ে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল চালকরা মাস্ক ছাড়া অবাদে ঘুরা ফেরা করলেও নিজেরা সরাসরি ফাইল নিয়ে ছুটছেন বিভিন্ন দপ্তরে। দিনভর চারদেশের চালকরা কোনো স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়া ঘন্টার পর ঘন্টা জটলা বেধে থাকছেন বন্দর অফিসের সামনে। তবে বন্দরের শর্তে ভিনদেশী চালকরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে নির্দিষ্ট স্থানে থাকার কথা থাকলেও তেমন কোনো নিয়ম কানুন চোখে পরেনি।

তবে পণ্য খালাস হওয়ার আগ পর্যন্ত ভিনদেশী চালকরা রাত যাপন করে কোনো কোনো চালক ঘুরছেন অবাধে। এমন অবস্থায় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে প্রকৃত পক্ষে পঞ্চগড়ের জন্য করোনার হট স্পট হয়ে দাড়াবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এদিকে ঢাকা থেকে আগত ড্রাইভারা বলেন স্থলবন্দরে গাদাগাদি টয়লেটে যেতে হয়। এতে করে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়।

এবিষয়ে কথা হয় ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা বিদেশি চালক গোবিন্দ রায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা যখন ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করি এবং বাংলাদেশ থেকে পণ্য খালাস করে ভারতে প্রবেশ করি তখন আমাদের দেশে আমাদের তাপমাত্রা রেকর্ড করে,গাড়ি স্প্রে করার সহ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করলেও বাংলাদেশে এসে কিছুই দেখিনি। কোন স্প্রে, তাপমাত্রা নির্ণয় এমন কি কেউ মাস্কও পড়তে দেখছি না। খুব আতংকে থাকতে হচ্ছে বাংলাবান্ধায় এসে।

একই কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ থেকে পন্য নিয়ে আসা বাংলাদেশি চালক কুদরতউল্লাহ। তিনি বলেন,বন্দরে এসে ভারত, ভুটান ও নেপালের চালকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় ও মাস্ক না পরে যে যার মতো করে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। কতৃপক্ষের তেমম কোন নজরদারি দেখছি না। আমরা দেশিয় চালকরা খুবই আতংকে আছি ভারতের নতুন ভেরিয়েন্টের ভয়ে । এখনি ব্যবস্থা না নিলে আমরাও ঝুঁকির মধ্যে পড়বো।

এবিষয়ে বাংলাবান্ধা আমদানী রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত- ই খুদা মিলন বলেন, আমাদের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর করোনা মহামারিতেও খোলা ছিল। তবে বন্দর কতৃপক্ষ, ব্যবসায়ী সবার প্রচেষ্টায় আমরা স্বাস্থ্য মেনে চলায় কেউই করোনায় আক্রান্ত হয়নি। যেহেতু ভারতে নতুন করোনার ভেরিয়েন্ট অমিক্রন সংক্রমণ বেড়েছে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দরে আমরা ব্যবসা পরিচালন করার চেষ্টা করছি। তবে বন্দর কতৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করছি আমরা ব্যববসায়ীরা।

বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের পোর্ট ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর একটি চতুদেশীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। মহামারী করোনা ভাইরাসের সময় যেভাবে সর্তক অবস্থানে থেকে আমদানী রপ্তানি কার্যক্রম চলছে ঠিক এখনও সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি রপ্তানির কার্যক্রম চলছে। সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে তার জন্য প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ