জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ নিয়ে কটুক্তি ও বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় রাজশাহী কাটাখালি পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্বাস আলীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার (২৪ নভেম্বর) দলীয় কার্যালয়ে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরী বৈঠকে আব্বাসকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজদার রহমান সরকার সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর সভাপতিত্বে জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আব্বাস আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে কেন দলীয় সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শণের নোটিশ দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
মাজদার রহমান আরও জানান, বৈঠক শেষে কাটাখালি আহব্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করে তিনদিনের মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়ে আব্বাসের নামে কারণ দর্শণের নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে।
এদিকে, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ নিয়ে কটুক্তি ও বিতর্কিত বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজশাহীতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিতর্কিত বক্তব্যদানকারী কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে দলীয় নেতাকর্মী ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মেয়র আব্বাসকে দল থেকে বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করে কাটাখালি পৌরসভা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার বেলা ১১টার দিকে কাটাখালি বাজারে জড়ো হয়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ করা হয়। এছাড়া বুধবার সকাল ১০টায় নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে মেয়র আব্বাস আলীকে দল থেকে দ্রুত বহিষ্কারসহ তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, মেয়র আব্বাস একটি ঘোরায় বৈঠকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পৌরসভার অংশের উন্নয়নকাজ নিয়ে কথা বলার সময় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি ও বিতর্কিত বক্তব্য দেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল নির্মাণ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার এই বক্তব্য ফাঁস হওয়া একটি অডিও রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে রাজশাহীর নগরের রাজপাড়া, বোয়ালিয়া ও চন্দ্রিমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ তিনটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এজাহারগুলো গ্রহণ করে মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছেন। মেয়র আব্বাস আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া তিনি পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ