তিন যুবককে শিকলে বেঁধে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম সূত্রাপুর চৌরাস্তা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।
ঢাকার ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পক্ষে না থাকায় তাদের হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই তিন যুবককে লোহার শিকলে বেঁধে রেখে হাত-পা গুঁড়িয়ে ফেলে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া তাদের মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছেন বালিয়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মজিবর রহমান।
এদিকে মাইকে প্রচার করে ওই চেয়ারম্যানের লোকজন রণপ্রস্তুতির ঘোষণা দেয়। এতে পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দফায় দফায় চলে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এতে কমপক্ষে আহত হয় অর্ধশতাধিক। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান, ধামরাই থানার পুলিশি সূত্র।
নির্বাচনে বিজয়ের পর ওই চেয়ারম্যান ও আব্দুল মজিদ, শামসুল আলম গেদু ও মো. সুজনসহ অপরাপর সদস্যরা ওই তিন যুবককে বিভিন্ন স্থানে খুঁজে বেড়ান। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে একটি মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার সময় পশ্চিম সূত্রাপুর চৌরাস্তা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই তিন যুবককে আটক করে ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন।
তাদেরকে লোহার শিকলে বেঁধে রেখে লোহার রড, বাঁশের লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তাদের হাত-পা গুড়িয়ে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়। ঘটনাটি এলাকাবাসী জানতে পেরে তারা দ্রুত লাঠিসোটাসহ ওই তিন যুবকের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহত হয় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক।
ওই তিন যুবককে উদ্ধারের পর সাটুরিয়া সরকারি আবাসিক হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
খবর পেয়ে সাভার-ধামরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ধামরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পুলিশ পরিদর্শক মো. ওয়াহিদ পারভেজ ও কাওয়ারীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রাসেল মোল্লাসহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ ঘটনস্থলে আসে।
এরপর তারা অভিযান চালিয়ে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান, মো. আব্দুল মজিদ, মো. আব্দুর রহমান, সদস্য মো. শামসুল আলম গেদু, মো. শিহাব আহাম্মেদ, মো. শামসুল হক, নজুমুদ্দিন, রাজন আহাম্মেদ, মজিবর আলী, পাপিয়া আক্তার ও রাশিদা বেগমকে আটক করে।
এ ব্যাপারে ধামরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত), পরিদর্শক মো. ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে এমন কর্মকাণ্ড কাম্য নয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাভার ধামরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ