ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সিলেটের ধর্মঘট প্রত্যাহার

প্রকাশনার সময়: ২২ নভেম্বর ২০২১, ২৩:৫৪

সিলেট বিভাগজুড়ে সকাল থেকে টানা ভোগান্তির পর সোমবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টায় প্রত্যাহার করা হলো পরিবহণ ধর্মঘট।

সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের পাঁচ দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস-কোচ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের কাছ থেকে সময় নেওয়া হয়েছে। সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের মধ্যস্থতায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে প্রায় সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত বৈঠকে ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। এসময় দাবি পূরণে আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়।

এর আগে সোমবার (২২ নভেম্বর) ভোর থেকে সিলেটে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকরা সিলেট বিভাগে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বন্ধ রাখেন সকল প্রকার পরিবহন। এতে হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় বেশি বিড়ম্বনায়।

সকালে সরেজমিনে সিলেট নগরীর কুমারপাড়া বাসস্ট্যান্ড, বন্দর পয়েন্ট, মদীনা মার্কেট, কদমতলিসহ অন্তত ১১টি মোড় ঘুরে মানুষের দুর্ভোগের দৃশ্য দেখা গেছে।

কোনোরকম যানবাহন না থাকায় পায়ে হেটে চলাচল ছাড়া বিকল্প পাননি কেউ। মাঝেমধ্যে রিকশায় চলাচল করলেও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। সেই সঙ্গে মোটরসাইকেল চালকরাও হাঁকান লাগামহীন ভাড়া।

তবে নগরের অভ্যন্তরে পায়ে হেঁটে হলেও কোনোরকম গন্তব্যে পৌঁছানো গেলেও বিপাকে পড়েন কর্মজীবীরা। যারা শহর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে অফিস করেন তাদের অসহায়ত্ব দেখা গেছে।

সেই সঙ্গে পরীক্ষার্থীদেরও রিজার্ভ গাড়ি নিয়েও চলাচল করতে হয়। এ ক্ষেত্রেও মোড়ে মোড়ে চালকদের জেরার মুখে পড়তে হয়। তবে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীরা অনেকেই ভোরে বের হয়ে পায়ে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে ছোটা শুরু করেছিলেন।

এদিকে শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ জানান, তাদের এই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পূর্বঘোষিত। গত ৯ নভেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে ৫ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়ে বাস্তবায়নের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, যেহেতু প্রশাসন থেকে তাদের দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, এজন্য তারা সিলেটে সর্বাত্মক পরিবহন ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করেন।

তাদের দাবিগুলো :

১) সিলেট জেলা বাস, মিনিবাস কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং বি ১৪১৮) নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার।

২) সাধারণ শ্রমিকদের উপর সিলেটের ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সব ধরণের হয়রানি বন্ধ।

৩) মেয়াদ উত্তীর্ণ শেরপুর সেতু, শেওলা সেতু, লামাকাজী সেতু, ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু, ছোয়ারা সেতু, শাহপরান সেতুর টোল আদায় ও লিজ বন্ধ।

৪) বিভিন্ন পৌরসভার নামে সব প্রকার টোল আদায় বন্ধ করা।

৫) সিলেটের চৌহাট্টাসহ বিভিন্ন স্থানে কার-মাইক্রোবাস, লেগুনা, সিএনজি অটোরিক্সাসহ ছোট গাড়ির জন্য পার্কিং স্থানের ব্যবস্থা করা।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ