ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত সাদুল্যাপুর চরের ৫শ’ পরিবার

প্রকাশনার সময়: ২২ নভেম্বর ২০২১, ১২:৫৪

চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা, হানারচর ইউনিয়ন ও হাইমচর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে জেগে উঠা সাদুল্যাপুর চর। তিন ইউনিয়নের প্রায় ৫শ’ পরিবার এই চরে বসবাস করে। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ না হওয়ার কারণে তারা সরকারের ডিজিটাল সেবাসহ নাগরিক অনেক সেবা থেকেই বঞ্চিত। নির্বাচন কেন্দ্রিক কিংবা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে খোঁজ হয় চরের এসব লোকদের। বাকি সময় তারা সরকারি ভাতা ও সহযোগিতা সঠিকভাবে পায় না। চরের এসব লোকদের যে কোন একটি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করে নাগরিক সুবিধার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি সাদুল্যাপুর চরে গিয়ে দেখাগেছে বসবাসকারী লোকদের নানা সমস্যার চিত্র। বহু বছর চরে বসবাস করার কারণে মায়া ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে পারছেন না। আবার অনেকের ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ নেই। বসবাসকারী লোকজন কৃষি ও মৎস্য আহরণ করেই জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। বিদ্যুৎ নেই, শিশুদের জন্য ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থাও খুবই দুর্বল। চিকিৎসার জন্য আসতে হয় চাঁদপুর জেলা সদরে।

সাদুল্যাপুর চরের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম বেপারী বলেন, চরে জেগে উঠার পর থেকে আমরা প্রায় ৫শ’ পরিবার বসবাস করি। চান্দ্রা, হানারচর ও গাজীপুর তিন ইউনিয়নের লোকজন আমাদেরকে ভোটার এবং লোকবলে দাবি করে। এসব টানা হেচড়ার কারণে আমরা সুবিধা বঞ্চিত। যে কোন একটি ইউনিয়নে আমাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করলে এবং সীমানা নির্ধারণ করে দিলে অসহায় পরিবারগুলো সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবে।

চরের বাসিন্দা রেজ্জাক হাওলাদার ও হাবিব মৃধা বলেন, আমরা সীমানা নির্ধারণ ছাড়া আর কতদিন অবহেলিত থাকব। দুর্যোগ দেখাদিলে চান্দ্রা ও হানাচর ইউনিয়ন থেকে কিছুটা সাহায্য সহযোগিতা করে। তাও সকলে পায় না। কিন্তু নির্দিষ্ট একটি ইউনিয়নে থাকলে সঠিকভাবে ভোট দিতে পারব এবং সরকারি সব সুবিধা পাব।

একই এলাকার বাসিন্দা মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মো. সোহাগ বলেন, আমাদের জন্মস্থান চরে। আমরা কোন ইউনিয়নের ভোটার এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে জানিনা। আমাদের সীমানা নির্ধারণ করে সকল সুযোগ সুবিধার আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।

হাইমচর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের একটি অংশ সদুল্যাপুর চরের পাশে আছে। কিন্তু ওই চরে হানারচর ও চান্দ্রা ইউনিয়নের লোকজন বেশী থাকে। সাদুল্যাপুর চরের পাশে আমাদের বাজাপ্তি চরে প্রায় শতাধিক পরিবার বসবাস করে।

চান্দ্রা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুজিব কবিরাজ বলেন, সাদুল্যাপুর চরে আমাদের ইউনিয়নের অল্প কয়েক পরিবার থাকে। তাদেরকে আমরা সরকারি সুযোগ সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করি। এই চরে আরো অনেক লোক বসবাস করে। কিন্তু তারা কোন ইউনিয়নের লোক সঠিকভাবে বলতে পারব না।

হানারচর ইউনিয়নের প্রবীণ ইউপি সদস্য কালু চৌকিদার বলেন, আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা মেঘনায় বিলীন হয়েগেছে। যার কারণে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের লোক এখন সাদুল্যাপুর চরে বসবাস করে। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নের লোকজন একই সাথে চরে থাকার কারণে এখন পর্যন্ত কোন সীমানা নির্ধারণ হয়নি। আমরা চাই সরকারের পক্ষ থেকে চরের লোকজনের সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সঠিকভাবে করা হউক। তাহলে এসব লোকজন তাদের ভোটাধিকার ও নাগরিক সুবিধা সঠিকভাবে পাবে।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ