২০২০ সালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর ইউনিয়নের চরবাহাদুরপুর গ্রামের দুলালবাড়ি চরে ‘গুচ্ছগ্রাম আবাসন প্রকল্প’–এর বাস্তবায়ন করা হয়। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪০টি টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়। ২ শতাংশ জমিসহ প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে একটি করে ঘর হস্তান্তর করা হয়।
দুলালবাড়ি চরের অবস্থান ময়মনসিংহ শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে। সেখানে নির্মিত গুচ্ছগ্রামে প্রায় দুই হাজার লোকের বসতি। ব্রহ্মপুত্র নদের এ চর এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে নেই রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ও হাটবাজার। পাকা সেতু না থাকায় সাঁকোতে করে নদ পারাপার হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
গত শুক্রবার দুলালবাড়ি চরে গিয়ে দেখা যায়, বরাদ্দ করা ঘরগুলোর অবস্থা তেমন সুবিধার নয়। জোরে বাতাস বইলেই কাঁপতে থাকে ঘরগুলো। মেঝে পাকা না হওয়ায় ইঁদুরের উৎপাত অনেক। ঘরের দরজা–জানালাগুলো নড়বড়ে। কিছু ঘরের সিমেন্টের খুঁটি ভেঙে পড়ছে। এখনো কয়েকটি ঘর খালি পড়ে আছে, বাসিন্দারা ওঠেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ ও ইউসুফ আলী বলেন, তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে কিন্তু সমস্যাও রয়েছে। ঘরগুলোর মেঝে কাঁচা। বৃষ্টি হলে আঙিনা ও মেঝে তলিয়ে যায়। ঘরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। পানি বের হওয়ার জন্য পাকা নালা নির্মাণের কথা থাকলেও তা নির্মাণ করা হয়নি। বর্ষাকালে ঘরের সামনে হাঁটুপানি জমে।
মহারানী চৌধুরী নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, তাঁদের ঘরগুলো চরের মাঝখানে অবস্থিত। একদিকে ব্রহ্মপুত্র নদ, অন্যদিকে খাল। ফলে যাতায়াতে সমস্যা হয়। পাকা সেতু না থাকায় স্থানীয়ভাবে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো করে পারাপার হতে হয়। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। নদের পানি বৃদ্ধি পেলে ভোগান্তির সীমা থাকেনা।
গৃহবধূ শহর বানু বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। গ্রামে কোনো স্কুলও নেই। দুটি গ্রাম পার হয়ে গিয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি হতে হয়। এদিকে বেশির ভাগ নলকূপে পানি ওঠে না। এলাকায় বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সংকট রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ হোসাইন বলেন, দুলালবাড়ি চর উন্নয়নের আওতায় আসবে এবং নাগরিক সুবিধা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ